আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে মস্কোকে চাপ দেওয়ার লক্ষ্যে রাশিয়ার দুটি বৃহত্তম তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকঅয়েল- এর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর বিবিসির।
ইউক্রেন-রাশিয়া শান্তি ইস্যুতে বুধবার (২২ অক্টোবর) ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আমি যখনই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলি, আমার সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা হয়। কিন্তু তারপর বিষয়টি সেখানেই থেমে থাকে।”
ট্রাম্প হাঙ্গেরিতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে পরিকল্পিত বৈঠক অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার কথা বলার মাত্র একদিন পর এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এলো। বুধবার ইউক্রেনজুড়ে তীব্র বোমাবর্ষণ করেছে রাশিয়া। এতে শিশুসহ কমপক্ষে সাতজন নিহত হন।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, “পুতিনের এই অর্থহীন যুদ্ধ বন্ধে অস্বীকৃতির কারণেই নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রয়োজন।” তিনি আরো বলেন, এই তেল কোম্পানিগুলো ক্রেমলিনের ‘যুদ্ধযন্ত্রে অর্থ জোগায়’।
বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, “হত্যাযজ্ঞ থামানোর এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার এখনই সময়।” বুধবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে রুটের সাথে বৈঠকে ট্রাম্প বলেন, “পুতিন শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তরিক নন।” ট্রাম্প আশা করেন, এই নতুন নিষেধাজ্ঞা মস্কোকে আলোচনায় অগ্রগতি আনতে বাধ্য করবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমার মনে হলো, সময় হয়ে গেছে। আমরা অনেক দিন অপেক্ষা করেছি।” তিনি নিষেধাজ্ঞার এ পদক্ষেপকে ‘অসাধারণ’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “রাশিয়া যদি যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয়, তবে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো দ্রুতই তুলে নেওয়া যেতে পারে।”
রুটে এই পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, “এটি পুতিনের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করছে। চাপ দিতে হয়, আর আজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেটাই করেছেন।”
গত সপ্তাহে যুক্তরাজ্যও রসনেফট ও লুকঅয়েলের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়। সেময় যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস বলেন, “রুশ তেলের জন্য বৈশ্বিক বাজারে কোনো স্থান নেই।”
জবাবে লন্ডনে রুশ দূতাবাস জানায়, এসব নিষেধাজ্ঞা বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত করবে, দাম বাড়াবে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর জ্বালানি নিরাপত্তায় ‘ক্ষতিকর প্রভাব’ ফেলবে।
রসনেফট ও লুকঅয়েল প্রতিদিন প্রায় ৩ দশমিক ১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানি করে। রসনেফট একাই রাশিয়ার মোট তেল উৎপাদনের প্রায় অর্ধেকের যোগানদাতা, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের ৬ শতাংশ।
তেল ও গ্যাস রাশিয়ার প্রধান রপ্তানি খাত, এর বড় ক্রেতা চীন, ভারত ও তুরস্ক। ট্রাম্প এই দেশগুলোকে রুশ তেল কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার। তিনি বলেন, “মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো অত্যন্ত সময়োপযোগী।”