স্বাস্থ্য ডেস্ক || মুখের ফোলাভাব কোনোভাবেই উপেক্ষা করবেন না। শারীরিক এই বৈশিষ্ট্য স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। কেননা এর পেছনে কোনো জটিল রোগ দায়ী হতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মুখ ফুলে যাওয়ার কারণ কী এবং কীভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে।
এডিমা বা শরীরের টিস্যুতে তরল জমা
মুখের ফোলাভাবের পেছনে দায়ী থাকতে পারে এডিমা, যা মূলত শরীরের টিস্যুতে তরল জমা হওয়াকে বোঝায়। এই সমস্যা শরীরের বিভিন্ন অংশে যেমন পা, গোড়ালি, হাত বা মুখমণ্ডলে দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘এই সমস্যাটি প্রায়শই অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ, হরমোনের পরিবর্তন বা অপর্যাপ্ত পানি পান করার ফলে হয়ে থাকতে পারে।’’
অ্যালার্জি
অ্যালার্জির কারণেও মুখে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। এই সমস্যায়, মুখে হালকা লালচে ভাব থেকে শুরু করে তীব্র ফোলাভাব (অ্যাঞ্জিওএডিমা) পর্যন্ত যেকোনো কিছু দেখা যায়। এর ফলে ব্যক্তির শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে।
সংক্রমণ
সাইনোসাইটিস, দাঁতের সংক্রমণ, বা ত্বকের সংক্রমণের কারণেও মুখ ফুলে যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণ ফোলাভাব এবং ব্যথা বৃদ্ধি করে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
থাইরয়েডের সমস্যা (হাইপোথাইরয়েডিজম) অথবা কর্টিসলের মাত্রা বৃদ্ধি (কুশিং সিনড্রোম) মুখ ফোলা দেখাতে পারে। ঋতুস্রাব বা মেনোপজের কারণেও পেট ফাঁপা হতে পারে।
ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ
কখনও কখনও অপর্যাপ্ত ঘুম অথবা মানসিক চাপের কারণে মুখ ফুলে যেতে পারে। অথবা অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবনের কারণেও মুখ ফুলে যায়। এটি সাধারণত চোখের নিচে ব্যাগের মতো দেখায়। বিশেষ করে রাতে উচ্চ লবণযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে মুখ ফুলে যেতে পারে।
মুখের ফোলাভাব দূর করার প্রতিকারে লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।
হাইড্রেশন এবং খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন
মুখের ফোলাভাব প্রতিরোধে সারাদিনে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন এবং কম পরিমাণে লবণ খান। শরীর ভেতর থেকে ভালো রাখতে আপনার খাদ্যতালিকায় পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কলা, পালং শাক) অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এই খাবারগুলো শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং অ্যালকোহল খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
ঠান্ডা সংকোচন
ফোলা জায়গায় বরফে মোড়ানো একটি তোয়ালে ১০-১৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। এই প্রতিকার রক্তনালীগুলোকে সংকুচিত করে ফোলা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, চোখের নিচে শসার টুকরো লাগানোও একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে।
অ্যালার্জি প্রতিরোধ
অ্যালার্জি প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এছাড়াও অ্যালার্জির কারণগুলো (যেমন নির্দিষ্ট কিছু খাবার বা প্রসাধনী) সনাক্ত করুন এবং সেগুলো এড়িয়ে চলুন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস