বিনোদন প্রতিবেদক || ‘১৮ অক্টোবর’ তারিখটি কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর ভক্ত-শ্রোতাদের জন্য বিষাদের। আইয়ুব বাচ্চু—যার গায়কি আর গিটারবাদনের জাদু ছুঁয়ে গেছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। আজও তার সেই সুর যেন ভেসে বেড়ায় প্রতিটি কনসার্টে, প্রতিটি গিটারের তারে।
মৃত্যুর সাত বছর পরও বেঁচে আছেন তিনি তার স্বপ্নে, আর সেই স্বপ্ন পূরণের পথে হেঁটে চলেছে ‘আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশন’। ২০২০ সালে শুরু হওয়া এই যাত্রা আনুষ্ঠানিক রূপ পায় চলতি বছরের ৯ জুলাই। আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফেরদৌস আক্তার বলেন, “বাচ্চুর স্বপ্ন পূরণ করতে পারলেই নিজেকে সার্থক মনে করব। কিন্তু সেই স্বপ্নের পথে হাঁটতে গেলে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতার, যা এখনও পাইনি পুরোপুরি।”
আজ এই গিটার জাদুকরের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার মগবাজারে আয়োজিত হচ্ছে দোয়া মাহফিল ও স্মরণানুষ্ঠান। ব্যান্ড জগতের সহযাত্রী থেকে শুরু করে পরিবার—সবাই সেখানে স্মরণ করবেন প্রিয় ‘বস’-কে।
ফাউন্ডেশনের অন্যতম লক্ষ্য—আইয়ুব বাচ্চুর নিজের হাতে বাজানো প্রিয় গিটারগুলো নিয়ে তৈরি করা ‘আইয়ুব বাচ্চু মিউজিক্যাল ক্যাফে’। এখানে সংগীতপ্রেমীরা যেমন আড্ডা দিতে পারবেন, তেমনি নতুন শিল্পীরাও আয়োজন করতে পারবেন তাদের অনুষ্ঠান।
অস্ট্রিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র—দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা প্রায় ৫০টি গিটার আজও নীরবে কথা বলে তার স্মৃতির সঙ্গে। সেই বিখ্যাত ফেন্ডার স্ট্রাটোকাস্টার আর আইভানেজ জেম ৭৭ আজও তার উপস্থিতির প্রমাণ হয়ে আছে মগবাজারের বাসায়। বছর দুয়েক আগে এসব গিটার নিয়ে ঢাকায় ও চট্টগ্রামে ছোট প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল বাচ্চুর পরিবার।
ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও ব্যান্ড এলআরবির দীর্ঘদিনের সহযাত্রী আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “শুধু গিটার নয়, থাকবে বসের ব্যবহৃত টি–শার্ট, হ্যাট, ক্যাপ, রোদচশমা—সবকিছু। এমনকি দর্শনার্থীরা ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটিতে তার কনসার্টের অনুভূতি নিতে পারবেন। এবি কিচেনের আদলে থাকবে একটি রেকর্ডিং স্টুডিও, মিলনায়তন, মিউজিক্যাল ক্যাফে—সবই পরিকল্পনায় আছে। কিন্তু বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা খুব জরুরি।”
ফেরদৌস আক্তার জানালেন, “গিটারগুলো আমরা যত্নে রেখেছি, ঠিক সেই তাপমাত্রায় যেভাবে সেগুলো টিকে থাকবে। বাচ্চুর গিটার তার আরেকটি অস্তিত্ব—যতদিন মিউজিয়াম গড়ে না ওঠে, আমরা ওগুলোকে বাঁচিয়ে রাখব ঠিক তেমনি।”