1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
ভারতের পাঞ্জাবে চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা, নিহত ৩০ - দৈনিক প্রথম ডাক
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

ভারতের পাঞ্জাবে চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা, নিহত ৩০

প্রথম ডাক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৫৩ বার দেখা হয়েছে

প্রথম ডাক ডেস্ক || গত ৩৭ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা দেখেনি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্য। লাগাতার অতিভারী বৃষ্টির জেরে পানি নিচে তলিয়ে গেছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গুরুতর এই পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবকে ‘বিপর্যস্ত রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছে আম আদমি পার্টি সরকার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, উদ্ধার কাজে নামতে হয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২৩টি দল উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে রাজ্যে।

সরকারি রিপোর্ট বলছে, বন্যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঞ্জাবের ২৩টি জেলাই। ৩০ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩.৪৫ লাখ মানুষ। প্রায় ১৪০০ গ্রাম পানি নিচে চলে গিয়েছে। ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ৫ হাজার জনকে পাঠানো হয়েছে ত্রাণ শিবিরে।

সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঠানকোট। এখানে মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের, নিখোঁজ আরো ৩ জন। লুধিয়ানায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যেই লাগাতার বৃষ্টি চলছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ক্ষতির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে গুরুদাসপুর জেলাও। এখানে ৩২৪টি গ্রাম ডুবে গেছে, এরপর অমৃতসর (১৩৫টি গ্রাম) এবং হোশিয়ারপুর (১১৯টি গ্রাম)। ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বার্নালা, বাথিন্ডা, ফিরোজপুর, পাতিয়ালা, এসএএস নগর, সাঙ্গরুর, তরন তারান এবং ফাজিলকা।

বন্যায় ১.৪৮ লাখ হেক্টরেরও বেশি ফসল নষ্ট হয়েছে, প্রায় ৩.৭৫ লাখ হেক্টর কৃষিজমি ডুবে গেছে। বন্যায় বহু গবাদি পশুর ভেসে যাওয়ায় দুগ্ধ উৎপাদন এবং পশুপালনেও প্রভাব পড়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রকে চিঠি লিখে ৬০ হাজার কোটি টাকা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পর্যাপ্ত সংখ্যক এনডিআরএফ বাহিনী এবং সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজে কোনো কমতি রাখা হবে না বলে রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে আশ্বস্ত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেইমতো উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনা, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর ১২টি দল, আরো ৮টি দল প্রস্তুত রয়েছে। প্রায় ৩০-৩৫টি হেলিকপ্টার, ১১৪টি নৌকা এবং রাজ্য একটি হেলিকপ্টারও উদ্ধারকাজে নিযুক্ত হয়েছে। বিএসএফ এবং এসডিআরএফকেও মোতায়েন করা হয়েছে।

এদিকে পাঞ্জাবের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে আজ বৃহস্পতিবার ওই রাজ্যে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। শিবরাজ বৃহস্পতিবার সকালে অমৃতসরে পৌঁছান। এরপরে বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে কৃষক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করেন। ফেরার পথে রাজ্যের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করবেন তিনি। কেন্দ্রের তরফে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন শিবরাজ।

উত্তর ভারতের একাধিক রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। গতকাল বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) তিনি এক্স হ্যান্ডলে মোদির উদ্দেশে একটি ভিডিও বার্তায় বলেছেন, “মোদিজি, পাঞ্জাব বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতিও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই কঠিন সময়ে, আপনার নজর এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সক্রিয় সাহায্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। হাজার হাজার পরিবার তাদের বাড়িঘর, জীবন এবং প্রিয়জনদের বাঁচাতে লড়াই করছে। আমি অনুরোধ করছি, এই রাজ্যগুলোর জন্য, বিশেষ করে কৃষকদের জন্য, অবিলম্বে একটি বিশেষ ত্রাণ ঘোষণা করার পাশাপাশি, ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানের গতি বাড়ানো হোক।”

লাগাতার বৃষ্টিতে বেহাল অবস্থা হিমাচল প্রদেশেরও। আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে সেখানে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে হিমাচলকে ‘বিপর্যস্ত রাজ্য’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু। বর্ষা মৌসুম শুরুর পর অর্থাৎ ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচলে ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যায় বেহাল অবস্থা হিমাচল প্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তরাখণ্ডের। ভারী বৃষ্টির জেরে ভারতের রাজধানী দিল্লিতেও বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT