1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
আমার ছেলেকে বিদেশে নেন, বাঁচান : মামুনের মা - দৈনিক প্রথম ডাক
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ন

আমার ছেলেকে বিদেশে নেন, বাঁচান : মামুনের মা

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৯ বার দেখা হয়েছে

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মামুন মিয়া। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মাথার খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে—এমন অকল্পনীয় পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়েছেন তার মা। দাবি জানিয়েছেন তাকে বিদেশে নেওয়ার।

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার খাটরা গ্রামের শুকুর মাহমুদ ও মমতাজ বেগম দম্পতির ছোট ছেলে মামুন। দিনমজুর বাবার রোদে পুড়ে ঘাম ঝরানো টাকায় বড় হয়েছেন তিনি।

প্রতিবেশীরা জানান, ছোটবেলা থেকেই মামুন ছিলেন সহজ-সরল ও মেধাবী। স্কুল থেকে কলেজ পেরিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে স্বপ্ন ছিলো উচ্চশিক্ষা আর পরিবারের ভাগ্য বদলানোর। কিন্তু ৩১ আগস্টের সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সব স্বপ্ন থেমে গেছে।

মামুনের বাবা শুকুর মাহমুদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “ছেলেকে পড়াশোনা করানোর জন্য রোদে পুড়ে দিনমজুরির কাজ করেছি। তার স্বপ্ন পূরণে অনেক ত্যাগ করেছি। এখন তার ছবিটা চোখে ভাসে, বুকটা ফেটে যায়।”

মামুনের মা মমতাজ বেগম বলেন, “আমার পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার ছোট মামুন। ও আমার বড় আদরের। খুব আশা করে বড় করেছি মামুনকে। আমার মেধাবী ছেলের খুলি ফ্রিজে, এটা তো সহ্য হয় না। আমরা তো এমনটা কখনো কল্পনাও করিনি। আমার ছেলেকে বিদেশে নেন, বাঁচান।”

প্রতিবেশী আজগর আলী চোখ মুছতে মুছতে বলেন, “মামুনের মতো এক তরুণকে এভাবে আমরা হারাতে চাই না। দ্রুত বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা না হলে ওকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে।”

চাচা ছানোয়ার হোসেন বলেন, “পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায়ও শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয়, এটা ভেবে আতঙ্কিত হচ্ছি। মামুনের জন্য সরকারের আর্থিক সহায়তা দরকার। দায়ীদের শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।”

চাচি রোমেলা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “মামুনের বাবা-মা খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ওর চিকিৎসার জন্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের আকুল অনুরোধ, দয়া করে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।”

প্রতিবেশী সুলতানা বেগম বলেন, “শৈশব থেকে মামুনকে বড় হতে দেখেছি। কখনো কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। আজ ওর এমন অবস্থা দেখে আমাদের বুক ফেটে যাচ্ছে।”

গত ৩০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর ভাড়া বাসার গেট খোলাকে কেন্দ্র করে দারোয়ানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জেরে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ওই রাতে শুরু হওয়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর সংঘর্ষ পরদিন রবিবারও চলে দফায়-দফায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপ-উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যসহ আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। হামলায় আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মামুনও।

চিকিৎসকরা জানান, মামুনের মাথার পেছনে ব্রেইনের অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। অপারেশনে তার মাথা থেকে ১৩ টুকরো হাড় বের করা হয়েছে। ব্রেনের অংশে অপারেশন করায় আপাতত খুলি খুলে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া, তার নাকে ও মুখে আঘাত লাগে, ফেটে যায় কানের পর্দা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT