আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মধ্যে বিভক্তি এড়াতে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চকক্ষ নির্বাচনে ইশিবার নেতৃত্বাধীন এলডিপি জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়। এরপর থেকেই তার পদত্যাগ নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। যদিও কয়েক সপ্তাহ আগেই প্রধানমন্ত্রী ইশিবা এসব জল্পনা অস্বীকার করে বলেছিলেন, তিনি নির্বাচনে পরাজয়ের দায়িত্ব কিভাবে নেবেন, সে বিষয়ে ‘উপযুক্ত সময়ে’ সিদ্ধান্ত নেবেন।
গত মঙ্গলবার তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পাদিত শুল্ক চুক্তি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করাই তার অগ্রাধিকার। সে কারণেই তিনি তৎক্ষণাৎ পদত্যাগের ডাকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। তবে দলের অভ্যন্তরে চাপ ক্রমেই বেড়ে যাওয়ায় শেষমেশ পদত্যাগের পথই বেছে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
রয়টার্স বলছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা ক্ষমতাসীন দলে ভাঙন এড়াতে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন বলে দেশটির গণমাধ্যমে রবিবার খবর প্রকাশিত হয়েছে। রয়টার্স যোগাযোগ করলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক মুখপাত্র তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সরকার জানিয়েছে, ইশিবা স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় সংবাদ সম্মেলন করবেন।
সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইশিবা এক বছরেরও কম সময় আগে প্রধামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ভোটারদের ক্ষোভের মধ্যে তার জোট সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। গত সোমবার এলডিপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা, তা নিয়ে ভোটের সময়সূচি নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ফলে ইশিবার ভাগ্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়।
মেইজি ইয়াসুদা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ কাজুতাকা মায়েদা বলেন, “এলডিপির বারবার নির্বাচনে পরাজয়ের পর ইশিবার ওপর রাজনৈতিক চাপ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে, তার পদত্যাগ অনিবার্য ছিল।”
ইশিবার সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের ক্ষেত্রে, কৃষিমন্ত্রী কোইজুমি এবং অর্থনীতিবিদ তাকাইচিকে সবচেয়ে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে যেহেতু উভয় কক্ষেই দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই, তাই এলডিপি সভাপতি প্রধানমন্ত্রী হবেন এমন নিশ্চয়তা নেই।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরবর্তী নেতা যিনিই হবেন তিনি ম্যান্ডেট পাওয়ার জন্য আগাম নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন। জাপানের বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ফাঁটল থাকলেও, অতি-ডানপন্থী ও অভিবাসন-বিরোধী সানসেইতো দল জুলাইয়ের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে বড় জয় পেয়েছে।