আন্তর্জাতিক ডেস্ক || জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামনি নেতানিয়াহু। এসময় তিনি একাধিক পশ্চিমা দেশের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ ‘শেষ না হওয়া পর্যন্ত’ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। খবর বিবিসির।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নেতানিয়াহুর বক্তৃতার শুরুতেই বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা প্রতিবাদে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন, যার ফলে সম্মেলন কক্ষের বিশাল অংশ খালি থাকে।
নেতানিয়াহু মঞ্চে উঠতেই সভাকক্ষে উপস্থিত বেশ কয়েকটি দেশের, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা সমন্বিতভাবে বেরিয়ে যান। সভায় হট্টগোল ও বিক্ষিপ্ত হাততালির মধ্যে তিনি বক্তৃতা শুরু করেন।
নেতানিয়াহু প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বলেন, গাজায় হামাস দুর্বল হলেও তারা এখনো হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে এবং ৭ অক্টোবরের মতো আবারও হামলার অঙ্গীকার করছে।
তিনি বলেন, “আমাদের জনগণের দৃঢ়তা, সেনাদের সাহসিকতা এবং আমাদের সাহসী সিদ্ধান্তের জন্যই ইসরায়েল তার অন্ধকারতম দিন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে- এটি ইতিহাসের অন্যতম সেরা সামরিক প্রত্যাবর্তন।”
নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, “তবে আমরা এখনো যুদ্ধ শেষ করিনি।”
নেতানিয়াহু পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে বলেন, যারা সম্প্রতি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তারা ‘ভয়ানক ভুল’ করেছে।
তার ভাষ্যে, “আপনারা ভালো কিছু করেননি, বরং একটি ভয়াবহ ভুল করেছেন। এই সিদ্ধান্ত আরও সহিংসতা ও সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করবে।”
তিনি দাবি করেন, এই স্বীকৃতি মূলত হামাসের মতো গোষ্ঠীগুলোকে পুরস্কৃত করছে।
নেতানিয়াহু আরো বলেন, “অনেক নেতা যারা আমাদের প্রকাশ্যে নিন্দা করে, তারাই আবার গোপনে ধন্যবাদ জানায়- কারণ আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কারণে বহুবার তাদের রাজধানীতে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত হয়েছে।”
এদিকে, নেতানিয়াহু যখন সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন তখন নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের বাইরে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা নেতানিয়াহুর আগমনের প্রতিবাদে স্লোগান দেন। এছাড়া, গাজায় হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরা তাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর এটি নেতানিয়াহুর প্রথম জাতিসংঘ ভাষণ। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কার মধ্যে কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন জাতিসংঘের দিকে।