রাজশাহী প্রতিনিধি || চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার দাবিকে কেন্দ্র করে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর থেকে টানা তিন দিন ধরে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগের দুদিনের মতো শনিবারও (২৭ সেপ্টেম্বর) এ সব জেলা থেকে বাস ছেড়ে যায়নি কিংবা প্রবেশ করেনি। ফলে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
বাস মালিকদের অভিযোগ, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা সম্প্রতি বাড়ানো হলেও তারা আবার নতুন ‘অযৌক্তিক’ কিছু দাবি সামনে এনেছেন। তাদের এই দাবির সঙ্গে একমত হতে না পেরে গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টা থেকে দূরপাল্লার বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মালিকপক্ষ। বর্তমানে কেবল একতা ট্রান্সপোর্ট ও কয়েকটি লোকাল রুটের বাস চলাচল করছে।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি বজলুর রহমান রতন বলেন, ‘‘চলতি মাসেই শ্রমিকরা দুবার বাস বন্ধ করেছিলেন। পরে ঢাকায় বৈঠক করে সমঝোতার ভিত্তিতে পরিবহন চলাচল শুরু হয়। অথচ নতুন করে তারা এমন কিছু দাবি তুলেছেন, যা মালিকদের কাছে অযৌক্তিক মনে হচ্ছে। এরমধ্যে চলতি পথে বিনাটিকিটে যাত্রী তোলা ও খোরাকি ভাতার দাবি রয়েছে।’’
অন্যদিকে শ্রমিকরা বলছেন, ‘‘আমাদের দাবি নতুন নয়; বহুদিন ধরেই এসব নিয়ম অনেক পরিবহনে প্রচলিত। আমরা চাই, সব পরিবহনে সমান নিয়ম কার্যকর হোক।’’
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, যাত্রাবিরতির সময় খাবারের খরচ কোম্পানি বহন করবে, টানা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি হলে অতিরিক্ত খোরাকি দিতে হবে, এসি কোটার টিকিটে বিশেষ সুবিধা দিতে হবে এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহনের অভিযোগে জরিমানা করার ক্ষমতা ইউনিয়নকে দিতে হবে, একইসঙ্গে রাজশাহীর ট্রিপ হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলের বেতন অনুযায়ী টাকা দিতে হবে।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি জানান, নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী ঢাকাগামী প্রতিটি ট্রিপে একজন চালক পাবেন ১ হাজার ৭৫০ টাকা, সুপারভাইজার ৭৫০ টাকা এবং সহকারী ৭০০ টাকা। শুক্রবার থেকে এ নিয়ম চালুর কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়নের আগে বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতেই মালিকরা বাস বন্ধ করে দেন।
হঠাৎ পরিবহন সংকটে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বিকল্প পথে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে তাদের। তবে অতিরিক্ত ভাড়া, অনিশ্চয়তা ও দীর্ঘ অপেক্ষায় দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে।