চাঁদপুর প্রতিনিধি || চাঁদপুরে পুরোদমে শুরু হয়েছে ইলিশের ডিম বেচাবিক্রি। এ কাজের জন্য চলতি মৌসুমে ময়মনসিংহ ও জামালপুর থেকে প্রায় অর্ধশত লোক চাঁদপুরের মাছঘাটে এসেছেন। আগামী ৩ অক্টোবর মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান শুরুর আগ পর্যন্ত চলবে এই ডিম সংগ্রহ ও বিক্রির কাজ।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বড়স্টেশনের মাছঘাটের রাস্তার পাশে টিনশেডের ঘরগুলোতে প্রকাশ্যেই ইলিশের ডিম সংগ্রহ ও বেচাকেনা করতে দেখা গেল।
জামালপুর থেকে আগত শ্রমিকরা জানান, ডিম সংগ্রহের জন্য ঘাটে নিলামে ওঠা নোয়াখালীর হাতিয়া বা চট্টগ্রাম থেকে আসা ৩/৪টায় কেজি হয় এমন নরম ইলিশ মণ হিসেবে কেনা হয়। এরপর সেই ইলিশের আঁশ ছাড়িয়ে পেটের ভিতর পরিষ্কার করার সময় ডিম বের করে নেওয়া হয়। এরপর সেই মাছ পানিতে ধুয়ে লবণ দিয়ে স্তুপাকারে সাজানো হয়। পরে সেই ডিম ড্রামের গরম পানি কিংবা সনাতনী পদ্ধতিতে কয়েক মাসের জন্য লোনা ইলিশ হিসেবে সংরক্ষণ করে অন্যত্র বিক্রির উদ্দ্যেশ্যে পাঠানো হয়।
ডিম বেচাকেনার উদ্যোক্তারা জানান, ইলিশের ডিমের আকার অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করে বাক্সে করে রপ্তানি কিংবা কেজি দরে খুচরাও বিক্রি করেন পাইকাররা। এরমধ্যে ছোট সাইজের ডিম ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকা এবং বড় সাইজের ডিম তিন হাজার থেকে ৩৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশের ডিম বের করে বিক্রির জন্য এখানে সিজনে ১৫/১৬ জন লোক উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। তবে অন্য সময় তারা আড়তদারির কাজে জড়িত থাকে।
ক্রেতারা জানান, প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে এসে ইলিশ কেনার পাশাপাশি ইলিশের ডিম কিনতে বড়স্টেশন মাছঘাটে আসেন তারা। ছোট ডিমের চেয়ে বড় সাইজের ডিমের প্রতিই সবার আগ্রহ। আগের তুলনায় এবার দামও কিছুটা কম।
বড়স্টেশন মাছঘাটের ব্যবসায়ী সম্রাট জানান, পদ্মা-মেঘনার বড় সাইজের ইলিশের দামে পোষাতে না পেরেই মূলত ব্যবসায়ীরা হাতিয়া, রামগতির নরম ছোট ইলিশগুলো মণ হিসেবে কিনে আনেন। সেই ইলিশ থেকে ডিম বের করে ক্রেতার চাহিদা মেটান। ইলিশের ডিম সুস্বাদু হওয়ায় বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের মৎস্য বনিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. হাজী শবে বরার বলেন, “ইলিশের ডিম ও সংরক্ষিত লোনা ইলিশ বেশিরভাগই শেরপুর, জামাল ও ময়মনসিংহে পাঠানো হয়। দিনে এই ঘাট হতে প্রায় ৫০০ কেজি ইলিশের ডিম বিক্রি হচ্ছে। আর এ কাজ ভালোভাবে করতেই অন্য জেলা হতে সিজনে ৫০ থেকে ৬০ জন লোককে এখানে আনা হয়। কাজটি তারা ভালো বোঝেন। মা ইলিশের অভিযান এবার ৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। ঐ সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় ইলিশ কেনাবেচা শুরু হলে চলবে ডিম বের করা ও বেচাবিক্রি।”