আন্তর্জাতিক ডেস্ক || যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন অঙ্গরাজ্যের পোর্টল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে প্রয়োজনে ‘পূর্ণ শক্তি’ ব্যবহারেরও অনুমতি দিয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ বাড়তে থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, পোর্টল্যান্ডকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় সব সেনা পাঠানোর জন্য প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প দাবি করেন, “এই পদক্ষেপে অ্যান্টিফা এবং অন্যান্য দেশীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণের মুখে থাকা আমাদের যে কোনো আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) স্থাপনাকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।”
ট্রুথ সোশালে তিনি আরো লেখেন, “আমি প্রয়োজনে পূর্ণ শক্তি ব্যবহারেরও অনুমোদন দিচ্ছি।”
এই ঘোষণার পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তারা বলেন, শহরে সেনা মোতায়েনের কোনো প্রয়োজন নেই।
ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক বলেন, “পোর্টল্যান্ডে কোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি নেই। আমাদের সম্প্রদায় শান্ত ও নিরাপদ। যেকোনো মোতায়েন ক্ষমতার অপব্যবহার হবে।”
বিবিসি জানিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে পোর্টল্যান্ডের দক্ষিণ জলতটে অবস্থিত আইসিই ভবনের সামনে প্রতিদিনই বিক্ষোভকারীরা জড়ো হচ্ছেন। সেখানে ফেডারেল এজেন্ট ও বিক্ষোভকারীদের মুখোমুখি অবস্থান চলছে। স্থানীয় নেতারা শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও তারা ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির কড়া সমালোচনা করছেন। তাদের দাবি, আইসিই ভবনটি অনুমোদিত নীতিমালা ভঙ্গ করে রাতারাতি মানুষ আটক রাখছে এবং ভূমি ব্যবহার বিধি লঙ্ঘন করছে। ফলে ভবনটি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
ট্রাম্প ঠিক কোন সামরিক বাহিনী পাঠাবেন, তা এখনো স্পষ্ট করে জানাননি। তবে অতীতে তিনি ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা মোতায়েন করেছেন। এবারও অনুরূপ বাহিনী পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এর আগে এই সপ্তাহেই ট্রাম্প এক আদেশে অ্যান্টিফাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
অ্যান্টিফা ‘অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ, যা মূলত অতিবামপন্থি কর্মীদের ঢিলেঢালা এক আন্দোলন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো দলকে দেশীয় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এ ধরনের উদ্যোগ সংবিধানের প্রথম সংশোধনীর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে, যা বাক ও সমাবেশের স্বাধীনতা রক্ষা করে।
এর আগে এ বছরের শুরুর দিকে ট্রাম্প লস অ্যাঞ্জেলেস ও ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন। এছাড়া মেমফিস, টেনেসিতেও সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে লস অ্যাঞ্জেলেসে মেরিন সেনা পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন ট্রাম্প।