আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ আবারো রাতভর রাশিয়ার ‘ব্যাপক হামলা’-এর শিকার হয়েছে। রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটস এ তথ্য জানান। খবর বিবিসির।
মেয়র জানান, রুশ হামলায় একটি বহুতল ভবন আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। কমপক্ষে তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেছেন, রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনজুড়ে হামলায় শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে। এর জবাব আরো কঠোর করতে হবে।” সর্বশেষ হামলা নিয়ে রাশিয়া কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে গতকাল শনিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেছিলেন, যুদ্ধ বন্ধ করার কোনো লক্ষণ রাশিয়ার নেই। কারণ তারা ন্যাটো সামরিক জোটের অন্তর্ভুক্ত বেশ কয়েকটি দেশে সাম্প্রতিক সময়ে আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইউরোপীয় বিমান প্রতিরক্ষা পরীক্ষা করছে।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় হামলা শুরু করেন এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য তার মার্কিন প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা উপেক্ষা করে আসছেন।
জেলেনস্কি বলেন, “পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করতে অপেক্ষা করবেন না। তিনি অন্য কোনো দিক খুলে দেবেন। কেউ জানে না সেটা কোথায়।”
ইউক্রেনের রাজধানীতে সর্বশেষ রুশ হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে মিত্র দেশগুলোকে সতর্ক করে তিনি এই মন্তব্য করেন।
পোল্যান্ডের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রবিবার ভোরে রাশিয়া পশ্চিম ইউক্রেনে হামলা চালানোর সময় রুশ যুদ্ধবিমান পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে।
পোলিশ সেনাবাহিনী আরো জানিয়েছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ডের আকাশসীমায় পোলিশ ও ন্যাটো বিমান তিনটি রাশিয়ান ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার পর থেকে আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনা নিয়মিত হয়ে উঠেছে।
গত সপ্তাহে ডেনমার্ক তাদের দেশের একাধিক বিমানবন্দর এলাকায় অজ্ঞাত ড্রোন উড়ার অভিযোগ করেছিল। তবে রাশিয়া এর দায় স্বীকার করেনি। ডেনমার্ক বলেছে, ঘটনাগুলো ‘পেশাদার’ কাজ বলে মনে হচ্ছে, তবে এটি কে হতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
এস্তোনিয়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিমান দিয়ে তার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।
এসব অনুপ্রবেশের ঘটনার পর, ন্যাটো তার পূর্বাঞ্চলকে শক্তিশালী করার জন্য সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
এমনকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে, ন্যাটো দেশগুলোর তাদের আকাশসীমায় রাশিয়ান বিমানগুলোকে গুলি করে ভূপাতিত করা উচিত।
তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে তার অবস্থানও পরিবর্তন করেছেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মন্তব্য করেন যে, রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়া সব জায়গা পুনরুদ্ধার করতে পারে ইউক্রেন।
শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া এক ভাষণে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, তার দেশের ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ন্যাটো সদস্য দেশগুলোতে আক্রমণ করার কোনো ইচ্ছা নেই। তবে তিনি মস্কোর দিকে পরিচালিত যেকোনো আগ্রাসনের ‘চরম প্রতিক্রিয়া’ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।