খেলাধুলা ডেস্ক || এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে নবমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ভারত। রিংকু সিংয়ের ব্যাট থেকে আসা জয়সূচক শটে শেষ হয় ম্যাচ। কিন্তু আসল নাটক তখনও বাকি। রেকর্ড শিরোপা জয়ের পরও ট্রফি ছুঁতে পারল না ভারতীয় ক্রিকেটাররা। কারণ, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি মোহসীন নাকভি রাগ করে নিজেই ট্রফি নিয়ে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যান।
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর ভারতীয়রা ছিলেন দারুণ উচ্ছ্বসিত। টেলিভিশন সম্প্রচারকারীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বললেন রিংকু, শুভমান গিল, কুলদীপ যাদব ও বোলিং কোচ মর্নে মর্কেল। দর্শকরাও অপেক্ষা করছিলেন, শিগগিরই অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের হাতে ট্রফি উঠবে। কিন্তু ঘণ্টা পেরিয়েও মঞ্চে এল না সেই মুহূর্ত। হঠাৎ করেই ঘোষক সাইমন ডুল জানিয়ে দিলেন- “এসিসি নিশ্চিত করেছে, আজ ভারত দল ট্রফি গ্রহণ করবে না।”
এরপরের ঘটনাপ্রবাহ ছিল আরও অদ্ভুত। পাকিস্তানি খেলোয়াড়রা হেরে গিয়েও অলস ভঙ্গিতে দেরি করে মঞ্চে আসেন, ফ্লিপ-ফ্লপ পরে হাঁটতে হাঁটতে। দর্শকরা প্রবলভাবে দুয়ো দেন। এমনকি রানার-আপ চেকটিও প্রকাশ্যে ছুড়ে ফেলে দেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগা। আর সেই সময় নাকভি ছিলেন একেবারেই অসহায় দর্শকের মতো।
তবে নাটক চূড়ান্ত রূপ নেয় যখন ভারতীয় দলকে ট্রফি দেওয়ার পালা আসে। সবার চোখে-মুখে অপেক্ষার ছাপ। কিন্তু ভারত তার হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি নাকভি হঠাৎ করেই মঞ্চ ছেড়ে ট্রফি নিয়ে চলে যান। ফলে বিজয়ী ভারতীয়রা বসে থাকলেন খালি হাতে, ট্রফিবিহীন। দর্শক আর সমর্থকদের চোখে মুখে ভেসে উঠল ঘৃণা “অসুন্দর”, “বিব্রতকর”- এমনই প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। শেষে কল্পিত ট্রফি নিয়ে উদযাপন করে ভারত দল।
তিন সপ্তাহের কদর্যতায় ঢাকা পড়ল ক্রিকেট:
পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচকে ঘিরে ছিল উত্তেজনা আর বিতর্ক। কখনও হাত মেলাতে অস্বীকৃতি, কখনও রাজনৈতিক ইঙ্গিতবাহী অঙ্গভঙ্গি; সব মিলিয়ে এশিয়া কাপ ২০২৫ ইতিহাসে থেকে যাবে সবচেয়ে কদর্য টুর্নামেন্টগুলোর একটি হিসেবে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ বা ২০০৩ আসরের তিক্ততাও যেন ছাপিয়ে গেল এবারের তিন সপ্তাহের বিব্রতকর নাটকীয়তা।
শেষ পর্যন্ত ভারত জিতেছে রেকর্ড নবমবারের মতো এশিয়া কাপ। কিন্তু শিরোপা উদযাপনের সেই মুহূর্তটিই হারিয়ে গেল খেলার মধ্যে রাজনৈতিক আবহ টেনে আনায়। বিজয়ী দলকে খালি হাতে ফিরতে হলো হোটেলে; যেন ক্রিকেট নয়, রাজনীতি ও নাটকই জিতল ফাইনালের রাতে।