এ কে এম গোলাম সারোয়ার || নোয়াখালীকে বিভাগ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার বিরুদ্ধে বৃহত্তর কুমিল্লা ও ফেনী জেলার ভৌগোলিক অবস্থান, লোকজন প্রধান বাধা। এছাড়া নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্ভূক্ত কিন্তু বিভিন্ন সরকারি অফিসের জোনাল অফিস, প্রধান অফিস কুমিল্লায় অবস্থিত, অবশ্য বিভাগের নাগরিকদের যোগাযোগ সুবিধার্থে এগুলো করা হয়েছে। ভৌগোলিক, যোগাযোগ, আয়তনের ব্যাপ্তির দিকে বৃহত্তর কুমিল্লায় বিভাগ হওয়া যুক্তিযুক্ত। তাই কুমিল্লা নামে বিভাগ হলে বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর আপত্তি থাকার কথা না, নেইও।
নোয়াখালী বিভাগ হওয়ার পেছনে ফেনী অঞ্চলের মানুষের সক্রিয় ভূমিকা চোখে পড়ছে না। তারা এখনও চুপচাপ,কুমিল্লায় বিভাগ হলে তাদের সুবিধা। যাতায়াত সহ নানান সুবিধা আছে। নোয়াখালী বিভাগ ঘোষণা দিলে বিভাগের হেডকোয়ার্টার মাইজদি বা চৌমুহনী চৌরাস্তার আশপাশে হলে ফেনীর লোকজন প্রয়োজনে সেখানে যেতে হবে। ফেনী নামে বিভাগের নামকরণ হলে ও বিভাগীয় হেডকোয়ার্টার ফেনীতে হলে ফেনীর লোকজন আন্দোলন করে, মহাসড়ক, রেলপথ অচল করে অল্প সময়েই দাবি আদায় করে ফেলতো। কিন্তু ফেনী আটকে গেছে অন্য এক জায়গায় সেটা হলো পূর্বে নোয়াখালী থেকে ভাগ হয়ে ফেনী জেলা হয়েছে ।
আসলে বিভাগে সাধারণ মানুষের যাতায়াত খুবই কম। যেখানে কর্মসংস্থান আছে, মানুষের প্রয়োজন আছে মানুষ সেখানেই গমন করে। যেমন বাংলাদেশের অনেক রোগী হার্টের চিকিৎসার জন্য দেবি শেঠি ও ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে যায়। এগুলো অনেক দূরে অবস্থিত ও ব্যয়বহুল, তবুও মানুষ সেখানে যায়। ব্যাংক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অনেক কিছুর কাজ এখন অনলাইন ইমেইলে শেষ হয়ে যায়, মিটিং সহ বিভিন্ন আলোচনা জুম মিটিং, টেলিকনফারেন্সে হয়। আমি চট্টগ্রাম বিভাগের নাগরিক কিন্তু চট্টগ্রামে আমার তেমন কোন কাজ নেই, আমার ৯০/৯৫ ভাগ কাজ ঢাকায় ও নোয়াখালীতে।
বিগত সরকার মানুষের ভোটের অধিকার হরণ সহ বিভিন্ন আকাম কুকাম ঢাকা দিতে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে নিয়ে গিয়ে শান্ত রাখতে একেকবার একেক হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের বেশি প্রয়োজন একটি উন্নত মানের বিশেষায়িত হাসপাতাল, ইপিজেড, কলকারখানা স্থাপন, যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন, একটা বিমানবন্দর, দুর্নীতি বন্ধ, এলাকা মাদক মুক্ত করা, শিক্ষার মান বাড়ানোর।
সরকার যদি কুমিল্লাকে বিভাগ ঘোষণা করে তাহলে বৃহত্তর নোয়াখালীকে বাদ দিয়েই করা উচিত। ফেনী নোয়াখালী লক্ষ্মীপুর জেলা নিয়ে “নোয়াখালী বিভাগ” নামে একটা বিভাগ হলে সবচেয়ে ভাল। সেই লক্ষীপুর থেকে ভারতের সীমান্ত, মেঘনা নদী থেকে কুমিল্লা চাঁদপুর সীমান্ত, এলাকাও কম নয় এবং বৈচিত্র্যময়। ফেনীর মানুষ অনেক আপডেট, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ি ফেনী। তিনি আমাদের গর্ব। তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে অনুরোধ করলে নোয়াখালী বিভাগ ঘোষণা হয়ে যায়। প্রধান উপদেষ্টা খালেদা জিয়ার অনুরোধ অবশ্যই রাখবেন। ফেনী জেলার মানুষ উদারতা দেখালে ফেনী -নোয়াখালী- লক্ষ্মীপুর নিয়ে নোয়াখালী বিভাগ হওয়া সময়ের ব্যাপার। নোয়াখালী বিভাগের হেডকোয়ার্টার বিভাগের লোকজনের যোগাযোগ সুবিধার্থে নোয়াখালীতে হবে , না হয় ফেনী ও নোয়াখালীর সীমানা শেষে মধ্যখানে হবে। ফেনীবাসীর প্রতি অনুরোধ আপনারা নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করুন। আমাদের পুরাতন বন্ধুত্ব সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় আন্তরিক হবে ইনশাআল্লাহ।