আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ইন্দোনেশিয়ায় গত সপ্তাহে একটি আবাসিক স্কুল ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনাকে চলতি বছরে দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয় বলে অভিহিত করা হয়েছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পূর্ব জাভা প্রদেশের সিদোয়ারজো শহরে আল খোজিনি ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল ধসে পড়ার পর শতাধিক শিক্ষার্থী আটকা পড়ে, ধ্বংস্তুপের নিচে চাপা পড়ে এবং পরে অনেকের মৃত্যু হয়।
দেশটির দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে উদ্ধারকারীরা ভারী যন্ত্র ব্যবহার করে ধ্বংসস্তুপের ৮০ শতাংশ পরিষ্কার করেছে এবং বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর মরদেহ ও শরীরের অংশ খুঁজে পেয়েছে।
দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার একজন ডেপুটি বুদি ইরাওয়ান বলেন, উদ্ধারকৃত মরদেহের ভিত্তিতে মোট ৫০ জন মারা গেছেন। ১০৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ আছেন ১৩ জন। আজ সোমবারের শেষ নাগাদ তাদেরকে উদ্ধার করার মাধ্যমে উদ্ধারকারীরা তাদের অনুসন্ধান শেষ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, “একটি ভবন থেকে এই বছর সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালে প্রাকৃতিক বা অন্যান্য সব ধরনের দুর্যোগের মধ্যে সিদোয়ারজোর মতো এত বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।”
একই সংবাদ সম্মেলনে অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার কর্মকর্তা ইউধি ব্রামান্ত্যো বলেন, আরো পাঁচটি দেহের অংশ পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫৪ জন।
ইউধি আরো বলেন, “আমরা আশা করছি আজই উদ্ধার কাজ শেষ করতে পারব এবং মরদেহগুলো (পরিবারের কাছে) ফিরিয়ে দেব।”
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ধসের কারণ ছিল স্কুলটির শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নতুন তলা নির্মাণের কাজ, যা ভবনের ভিত্তি ধরে রাখতে পারেনি।
দেশটির ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইন্দোনেশিয়া জুড়ে প্রায় ৪২ হাজার ইসলামিক স্কুল রয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে পেসানট্রেন নামে পরিচিত।
রবিবার স্থানীয় গণমাধ্যমে দেশটির গণপূর্তমন্ত্রী ডোডি হ্যাংগোডোর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মাত্র ৫০টি পেসানট্রেনের ভবন নির্মাণের অনুমতি রয়েছে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, আল খোজিনির ভবন নির্মাণের অনুমতি ছিল কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। মন্তব্যের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।