আন্তর্জাতিক ডেস্ক || যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেছেন। গাজামুখী ত্রাণ বহরের সঙ্গে যাত্রা, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার এবং পরবর্তীকালে বিতাড়িত হওয়ার ঘটনায় তিনি থুনবার্গকে ‘ঝামেলাবাজ’ বলে অভিহিত করেছেন।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে ৪০টিরও বেশি নৌযানে ত্রাণ নিয়ে গাজায় যাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে গত বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার ৪৭৯ জনকে আটক করে ইসরায়েল। আটক এসব অধিকারকর্মীর মধ্যে সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ আরো ১৭১ জনকে গ্রিস এবং স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠায় ইসরায়েল।

সোমবার হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গ্রেটা থুনবার্গ এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনিপন্থি অধিকারকর্মীদের নির্বাসন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, যারা গাজার উপর ইসরায়েলি সামুদ্রিক অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন।

এসময় ট্রাম্প বলেন, ‘সে (থুনবার্গ) কেবল একজন ঝামেলাবাজ। সে পরিবেশ আন্দোলন নিয়ে নেই, এখন অন্য কিছুর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। ওর রাগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা আছে। আমার মনে হয় ওর ডাক্তার দেখানো দরকার।”

ট্রাম্প সাংবাদিকদের আরো বলেন, “আপনি কি কখনো তাকে দেখেছেন? সে একজন তরুণী। ওর রাগ খুব বেশি। খুবই পাগল। সে কেবল একজন সমস্যা সৃষ্টিকারী।”

উল্লেখ্য, ট্রাম্প ও থুনবার্গের মধ্যে এই দ্বন্দ্ব নতুন নয়। থুনবার্গ ২০১৯ সালে টাইমস ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হওয়ার ট্রাম্প তাকে কটাক্ষ করেছিলেন।

ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে সোমবার গ্রিসে পৌছান থুনবার্গ। তার আইনজীবীদের অভিযোগ, ইসরায়েলি কারাগারে থুনবার্গকে নির্যাতন করা হয়েছে এবং জোর করে ইসরায়েলের পতাকায় চুমু খাওয়ানো হয়েছে।

তবে গ্রিসের এলিফথেরিওস ভেনিজেলোস বিমানবন্দরে দেওয়া বক্তব্যে থুনবার্গ বলেন, “আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কারাগারে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও নির্যাতন সম্পর্কে আমি অনেকক্ষণ কথা বলতে পারি, বিশ্বাস করুন। কিন্তু সেটাই আসল গল্প নয়। আসল বিষয় হলো, আমাদের চোখের সামনে (গাজায়) গণহত্যা চলছে, লাইভ-স্ট্রিমড (সরাসরি সম্প্রচারিত) গণহত্যা।”

থুনবার্গ বলেন, “আজ কেউ এই অজুহাত দিতে পারবে না যে তারা জানত না (গাজায়) কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ বলতে পারবে না- ‘আমরা জানতাম না’।”

থুনবার্গ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আরো বলেন, “তারা ‘গণহত্যার উদ্দেশ্যে’ সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ‘একটি পুরো জাতিকে মুছে ফেলতে চায়’।”

তিনি বলেন, “গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।”

থুনবার্গ আরো বলেন, “আমি কখনও বুঝতে পারব না মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে কীভাবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে- যারা বছরের পর বছর অবরোধ ও নিপীড়নের মধ্যে বন্দি।”