নিজস্ব প্রতিবেদক || ধীরে ধীরে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে-এমন মন্তব্য শুনেই সাংবাদিককে ডেকে মাইকে প্রশ্নটি আবার করতে বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে সেই প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) ২০টি নতুন গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি নতুন ২০টি গাড়ির চাবি ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর হাতে তুলে দেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশের যানবাহনের স্বল্পতা দীর্ঘদিনের সমস্যা। সম্প্রতি সরকারিভাবে ২০০টি গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। এরপরও প্রয়োজন অনুযায়ী গাড়ির ঘাটতি রয়ে যাবে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে ফাইন্যান্স ও শিল্প উপদেষ্টার সহায়তায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, চলতি বছর আরো বেশ কিছু গাড়ি ক্রয় করা সম্ভব হবে।”
তিনি জানান, ঢাকার ৫০টি থানার মধ্যে ২৫টি এখনও ভাড়া ভবনে চলছে। সম্প্রতি পাঁচটি নতুন থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো দুটি থানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এ সময় এক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ডিএমপি কমিশনার স্বল্প জনবল নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে কিছু মহল নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য ঝটিকা মিছিল ও অন্যান্য কর্মকাণ্ড করছে-এগুলো কেন ঠেকানো যাচ্ছে না?”
প্রশ্নটি শুনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা থেমে যান। এরপর তিনি সাংবাদিককে ডেকে বলেন, “ভাই, প্রশ্নটা মাইকে করুন— সবাই শুনুক।”
সাংবাদিক প্রশ্নটি পুনরায় করলে উপদেষ্টা হেসে বলেন, “আপনি দেখেন, ভাই! একটা ভালো কথা বলতে বলতেও শেষে খারাপ কথা মুখে চলে আসে— অভ্যাসটা কিন্তু দূর হতে সময় লাগে।”
তার এ মন্তব্যে অনুষ্ঠানস্থলে হাসির রোল পড়ে। পরে তিনি বলেন, “আপনার কথাটা সত্য। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সত্যিই উন্নতি করছে। ঝটিকা মিছিলের সংখ্যাও কমছে। সম্প্রতি ২৪৪ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তারের পর এ ধরনের ঘটনার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গণমাধ্যম যদি ইতিবাচকভাবে সহযোগিতা করে, তাহলে এসব একসময় সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।”
তিনি আরো বলেন, “সবাই যখন নির্বাচনমুখী হবে, তখন এই ধরনের অপরাধ আরো কমে যাবে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে ঠিকই, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত থাকবে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে কাজ করলে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।”
জনগণকে ‘সবচেয়ে বড় স্টেকহোল্ডার’ উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “জনগণ নির্বাচনের ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। এখনই চায়ের দোকানে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আপনারা (গণমাধ্যম) প্রচার করলে এই আলোচনা আরো বাড়বে, আর সচেতনতাও বৃদ্ধি পাবে।”