আন্তর্জাতিক ডেস্ক || এক মাস আগে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন সেবাস্তিয়ান লেকর্নু। তবে রাজনৈতিক চাপের মুখে গত ৬ অক্টোবর পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। ফের সেই পদেই তাকে নিয়োগ করলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ।
শনিবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্রাসাদ থেকে এই আকস্মিক ঘোষণা আসে। এই অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেন ম্যাখোঁ। এই পুনর্বহাল এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ফ্রান্সে সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র দর কষাকষি চলছিল। লেকর্নু, যিনি গত আট বছরের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর সপ্তম প্রধানমন্ত্রী, তার পুনরায় নিয়োগকে অনেকেই একটি চমকপ্রদ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
এলিসি প্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, লেকর্নুকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিয়োগের পাশাপাশি তাকে সরকার গঠনেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। লেকর্নু ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন এক্স হ্যান্ডলে পোস্টের মাধ্যমে।
পোস্টে লেকর্নু লিখেছেন, “আমি দায়িত্ববোধ থেকে প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের দেওয়া এই দায়িত্ব গ্রহণ করছি। বছরের শেষের মধ্যে বাজেট পাস করানো এবং নাগরিকদের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানই এখন আমার অগ্রাধিকার।”
এর আগে ম্যাখোঁ শুক্রবার প্রেসিডেন্ট ভবনে সব প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তবে অতি ডানপন্থি ন্যাশনাল র্যালি ও বামপন্থি ফ্রান্স আনবাউড দলকে আমন্ত্রণ জানাননি।
বিবিসির প্রতিবেদনের তথ্যমতে, অতি ডানপন্থি রাজনীতিবিদরাও এখন লেকর্নুর সরকারে যোগ দিতে আগ্রহী নন, ফলে তার সামনে মন্ত্রিসভা গঠনের বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে।
ফ্রান্সের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মূল কারণ হলো ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর নেওয়া একটি আকস্মিক সিদ্ধান্ত। তিনি সে সময় জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর অনুষ্ঠিত আগাম নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক জোটই পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি, যার ফলস্বরূপ একটি ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হয়। এর ফলে কোনো প্রধানমন্ত্রীই প্রয়োজনীয় সমর্থন নিয়ে আইন প্রণয়ন করতে পারছেন না, যা দেশে গভীর বিভাজন সৃষ্টি করেছে।
গত এক বছরের মধ্যে লেকর্নুর আগে পর পর তিনজন পদত্যাগ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে। চতুর্থ পদত্যাগকারী হিসাবে নাম জুড়েছিল লেকর্নুর। তবে ম্যাখোঁ ‘অনুগত’ হিসাবে পরিচিত তিনি পুনরায় ওই পদেই নিযুক্ত হলেন।
ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি হঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, সরকারের পতনে তারা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলেও হুমকি হয়েছে। তাদের দাবি, ‘এই সরকারের কোনো ভবিষ্যৎ নেই’। পুনরায় লেকর্নুর নিয়োগ প্রসঙ্গে অতি ডানপন্থি নেতা জর্ডান বারডেলার কটাক্ষ, ‘খারাপ রসিকতা’।