1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় ৬০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে - দৈনিক প্রথম ডাক
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫১ অপরাহ্ন

হাইতিতে গ্যাং সহিংসতায় ৬০ লাখ মানুষ চরম খাদ্য সংকটে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৩৮ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ক্যারিবীয় দেশ হাইতিতে প্রায় ৬০ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্যসংকটে ভুগছে, যা দেশটির জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। এই সংকটের প্রধান কারণ হলো গ্যাং সহিংসতা ও অর্থনৈতিক সংকট, যার ফলে খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত এবং জীবনযাত্রা চরমভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।

শনিবার (১১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ শক্ত করে তুলছে, যার ফলে বিধ্বস্ত অর্থনীতির নিম্নগামী ধারা অব্যাহত রয়েছে।

ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) কর্তৃক শুক্রবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গ্যাংদের দখল, সহিংসতা, কৃষি উৎপাদন ধ্বংস ও ত্রাণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৫৭ লাখ হাইতিয়ান তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে। ১৯ লাখ মানুষ ইতিমধ্যেই জরুরি পর্যায়ের ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। আর ৩৮ লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাইতির সরকার শুক্রবার ‘ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সিকিউরিটি অফিস’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায়। অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট পরিষদের সদস্য লুই জেরাল্ড জিল বলেন, সরকার দ্রুততম সময়ে ক্ষুধার্ত জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছাতে কাজ করছে।

তবে বাস্তবে এ প্রচেষ্টা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। বর্তমানে গ্যাংগুলো রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সম্প্রতি কৃষি অঞ্চলেও তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে।

সহিংসতার কারণে ১৩ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, যা ডিসেম্বরের পর থেকে ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাসাঠাসি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন, যেখানে পানি, খাবার ও চিকিৎসার মতো মৌলিক সেবা নেই।

যারা কৃষিকাজে টিকে আছেন, তাদেরকে গ্যাংদের সঙ্গে দরকষাকষি করে জমিতে প্রবেশ করতে হচ্ছে এবং ফসলের একটি অংশ দিতে হচ্ছে চাঁদা হিসেবে। ছোট ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে অসংখ্য পরিবারের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে গেছে। ফসল স্বাভাবিক ফলনে পৌঁছালেও, গ্যাংগুলো প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ করে রাখার কারণে পণ্য পোর্ট-অ-প্রিন্সে পৌঁছাতে পারছে না।

অর্থনৈতিকভাবে দেশটি মারাত্মক সংকটে পড়েছে। টানা ছয় বছর ধরে মন্দায় থাকা হাইতিতে গত জুলাইয়ে খাদ্যের দাম গত বছরের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেড়েছে।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত একটি পৃথক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সহিংসতার কারণে ৬ লাখ ৮০ হাজার শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী পরিসংখ্যানের প্রায় দ্বিগুণ। এক হাজারেও বেশি স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শত শত নাবালককে নিয়োগ করেছে।

হাইতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই মাসের শুরুতে জাতিসংঘে ৫ হাজার ৫৫০ সদস্যের একটি নতুন ‘গ্যাং দমন বাহিনী’ অনুমোদন করেছে।

কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। বৃহস্পতিবার, পোর্ট-অ-প্রিন্স শহরের কেন্দ্রস্থলে জাতীয় প্রাসাদে সরকারি কর্মকর্তারা বৈঠক করার চেষ্টা করলে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে গ্যাং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাজধানী এলাকা থেকে তারা দ্রুত সরে যেতে বাধ্য হন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT