নিউজ ডেস্ক || ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুল হয়ে দেশে ফিরেছেন আলোকচিত্রী, মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম। শনিবার (১১ অক্টোবর) ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
দেশে ফিরে শহিদুল আলম বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা আমাকে ফিরে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। মনে রাখতে হবে যে গাজার মানুষ এখনো মুক্ত হয়নি। গাজার মানুষ এখনো আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের ওপর এখনো নির্যাতন চলছে। আমাদের কাজ কিন্তু শেষ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।”
সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন তিনি বলেন, “সারা পৃথিবী থেকে বাংলদেশিরা যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, দোয়া করেছেন, বাংলাদেশ সরকার ও টার্কিশ সরকার যেভাবে সাহায্য করেছেন-সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
আরো হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার জানিয়ে শহিদুল আলম বলেন, “আমি যেতে পেরেছি, অনেকে পারেনি। অনেকে যেতে চেয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে। আমাদের মত আরো হাজার ফ্লোটিলা যাওয়া দরকার, যতদিন না ফিলিস্তিন স্বাধীন হয়।”
বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি বাহিনী তা ছুড়ে ফেলেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমার সবচেয়ে অপমানবোধ হয়েছে, যখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখে ইসরায়েলি সেনা সদস্যরা বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট মাটিতে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। এটা দেখে আমার খুবই খারাপ লেগেছে। এর জন্য আমাদেরকে বিচার আদায় করে নিতে হবে। একটি দেশের পাসপোর্ট এমনভাবে ছুড়ে ফেলে অপমান করে পার পেয়ে যাবে—তা মেনে নেওয়া যায় না।”

বিমানবন্দরে পৌঁছালে শহিদুল আলমকে স্বাগত জানান তার পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা।
নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে, কঠিন সময় গেছে। কিন্তু গাজাবাসী যে নির্যাতনের মধ্যে আছে, তার তুলনায় কিছুই না।”
গত বুধবার গাজাগামী নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলার জাহাজগুলো দখল করে নেয় ইসরায়েলি বাহিনী। ওই বহরে ‘কনশানস’ নামের একটি জাহাজে ছিলেন শহিদুল আলম। তাকেসহ জাহাজগুলোতে থাকা অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ইসরায়েলের কারাগারে।
বাংলাদেশ সরকার এর তীব্র নিন্দা জানায়। এরপর শহিদুল আলমকে মুক্ত করতে জর্ডান, মিশর ও তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর ভিত্তিতে তুরস্ক সরকারের সহযোগিতায় তাকে মুক্ত করা সম্ভব হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়।