আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাশিয়ার একটি সাবমেরিন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাগরে ভেসে উঠেছে- এমন খবরে রুশ নৌবহরের অবস্থা নিয়ে ব্যাঙ্গ করেছেন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর প্রধান মার্ক রুটে। তিনি রুশ সাবমেরিনটিকে ‘ল্যাংড়া’ সাবমেরিন বলে রসিকতা করেছেন। যান্ত্রিক ত্রুটির বিষয়টি অস্বীকার করেছে রাশিয়া।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার (১৩ অক্টােবর) স্লোভেনিয়ায় এক ভাষণে ন্যাটো প্রধান বলেন, “১৯৮৪ সালের টম ক্ল্যান্সির উপন্যাস দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর-এর মতো দৃশ্য আর নেই। এখন মনে হচ্ছে যেন, রাশিয়ার সাবমেরিনগুলো বাড়ি ফেরার পথে মেকানিক খুঁজছে।”
রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিট জানিয়েছে, তাদের ডিজেলচালিত সাবমেরিন নোভোরোসিস্ক ফ্রান্সের উপকূলে নেমেছিল (ভেসে উঠেছিল) ন্যাভিগেশন নিয়ম মেনে চলার জন্য। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সময় সাবমেরিনটিকে একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ও হেলিকপ্টার পর্যবেক্ষণ করছিল।
নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার (১১ অক্টােবর) জানিয়েছিল, সাবমেরিনটিকে উত্তর সাগরে টাগবোট দিয়ে টেনে নেওয়া হচ্ছিল- যা যান্ত্রিক ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়।
তবে সোমবার রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্রান্সের উপকূলে ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিন নোভোরোসিস্কের জরুরি ভেসে ওঠা সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রচারিত তথ্য বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আন্তর্জাতিক ন্যাভিগেশন আইনের অধীনে সাবমেরিনগুলোকে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সময় ভেসে থাকতে হয়।
এদিকে, রুশ নিরাপত্তা সংক্রান্ত ফাঁস প্রকাশের জন্য পরিচিত টেলিগ্রাম চ্যানেল ভিসিএইচকে-ওজিপিইউ দাবি করেছে, ২৭ সেপ্টেম্বর সাবমেরিনটির জ্বালানি ট্যাঙ্ক থেকে তেল লিক হচ্ছিল জিব্রালটার প্রণালিতে, যা বিস্ফোরণের ঝুঁকি তৈরি করেছিল।
সাবমেরিনটি ভূমধ্যসাগর থেকে ফেরার পথে ছিল। ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি জানায়, ৭ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত তারা সাবমেরিনটিকে তিন দিন নজরদারিতে রেখেছিল।
ন্যাটো মিশনের অংশ হিসেবে এইচএমএস আয়রন ডিউক সাবমেরিন ও এর সাপোর্ট টাগবোটকে ইংলিশ চ্যানেল থেকে উত্তর সাগর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে। এরপর ডাচ নৌবাহিনীও সেটিকে এসকর্ট করে বলে নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রুটে তার ভাষণে বলেন, “ভূমধ্যসাগরে এখন রুশ নৌবাহিনীর উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ন্যাটো প্রধানের মন্তব্য রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতাকে ব্যঙ্গ করার পাশাপাশি পশ্চিমা ঐক্যের বার্তাও বহন করছে।