চবি প্রতিনিধি ||
চাকসু নির্বাচনের ভোট দিচ্ছেন নারী শিক্ষার্থী
চাকসু নির্বাচন ঘিরে উৎসবের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা লাইনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকায় স্বাচ্ছন্দ্য প্রকাশ করেছেন তারা।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি কেন্দ্রের ৬০টি নির্বাচনি কক্ষে ভোট শুরু হয়। সকাল সাড় ১০টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের দেড় ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসের ভেতরে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দ নিয়ে ভোট দিতে যাচ্ছেন, তেমনি যারা বাইরে থাকেন তারাও দলে দলে ক্যাম্পাসে আসছেন ভোট দিতে। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ভোটের আনন্দ উদযাপন করছেন সবাই।
সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে (ক্যাম্পাসে প্রবেশের মূল প্রবেশ দ্বার) দেখা গেছে, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ক্যাপাসে প্রবেশ করছেন কার্ডধারী শিক্ষার্থীরা। আইডি কার্ড প্রদর্শন ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীকেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি পোশাক ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার। তাদের মধ্যে ক্যাম্পাসে থাকেন সাত হাজার শিক্ষার্থী। বাকি ২১ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে থাকেন। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা দলে দলে ক্যাম্পাসে আসছেন ভোট দিতে। বিভিন্ন যানবাহনে জিরো পয়েন্টে এসে তারা আইডি কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের আনাগোনায় পুরো জিরো পয়েন্ট উৎসবের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

কার্ড দেখিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন শিক্ষার্থীরা
৬০টি নির্বাচনি কক্ষের প্রত্যেকটি কক্ষে রয়েছে পাঁচটি ব্যালট বাক্স। চাকসু নির্বাচনের জন্য চারটি এবং হল সংসদের জন্য একটি ব্যলট বাক্স থাকবে। একটি কক্ষে ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ভোট দেওয়ার জন্য প্রত্যেক ভোটার পাচ্ছেন ১০ মিনিট সময়। একজন ভোটার চাকসুতে ২৬টি ও হল সংসদে ১৪টিসহ মোট ৪০টি ভোট দেবেন।
চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন ৯০৮ প্রার্থী। এর মধ্যে শুধু চাকসুর ২৬টি পদে লড়বেন ৪১৫ জন প্রার্থী। চাকসুর সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ২৩ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ২২ জন, সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সবচেয়ে বেশি প্রার্থী পাঁচটি নির্বাহী সদস্য পদে ৮৫ জন।
অন্যদিকে, ১৪টি হল ও একটি হোস্টেল সংসদে লড়বেন ৪৯৩ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নয়টি ছাত্র হলের প্রার্থী ৩৫০ ও পাঁচটি ছাত্রী হলের প্রার্থী ১২৩ এবং হোস্টেল সংসদে প্রার্থী ২০ জন।
চাকসু নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ভোটার ১৬ হাজার ৮৪ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১১ হাজার ৩২৯ জন শিক্ষার্থী। ছাত্র ভোটার শতকরা ৫৮.৪৭ শতাংশ এবং ছাত্রী ভোটার ৪১.১৭ শতাংশ। মোট ভোটারের ৭০ শতাংশই অনাবাসিক, বাকি ৩০ শতাংশ ভোটার থাকেন হল, হোস্টেল ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কটেজে।

ভোট দিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন চবি শিক্ষার্থীরা
এদিকে, শহরে থাকা প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটারের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত সহজ করতে শাটল ট্রেনের অতিরিক্ত দুটি শিডিউল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া, শহর থেকে ক্যাম্পাস যাতায়াতের জন্য রয়েছে ১৫টি বিশেষ বাস।
১৫টি কেন্দ্রের পাশাপাশি দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি বিশেষায়িত কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ভোটারদের ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে দুইজন নির্বাচন কমিশনার সার্বিক তত্ত্বাবধান করছেন।