খেলাধুলা ডেস্ক || লিওনেল মেসির অনবদ্য পারফরম্যান্সে দুর্দান্ত এক জয় পেল আর্জেন্টিনা। দুটি অ্যাসিস্ট ও আরেকটি গোলের সূচনায় ভূমিকা রেখে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা মঙ্গলবার রাতে প্রীতি ম্যাচে পুয়ের্তো রিকোকে ৬-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল।
ম্যাচটি মূলত সোমবার শিকাগোতে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আয়োজকরা শেষ মুহূর্তে তা সরিয়ে দেন। শিকাগোর কর্মকর্তারা বলেছিলেন, টিকিট বিক্রি কম ছিল। তবে আর্জেন্টিনা ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শহরে চলমান অভিবাসন অভিযানই আসল কারণ।
ইন্টার মায়ামির মাঠে, নিজের পরিচিত ঘাসে খেলতে নেমে যেন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন মেসি। প্রথমার্ধে গঞ্জালো মন্টিয়েলের গোলে তার এক চমৎকার ফ্লিক পাস ছিল জাদুর মতো। এরপর ৮৩তম মিনিটে ব্যাক-পাস থেকে লাউতারো মার্তিনেজের দ্বিতীয় গোলের জন্ম দেন এই আর্জেন্টাইন জাদুকর।
আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারও জোড়া গোল করেন। তাছাড়া দ্বিতীয়ার্ধে এক আত্মঘাতী গোলও পায় আর্জেন্টিনা।
তবে ম্যাচটিতে ছিল একাধিক অদ্ভুত পটভূমি। শিকাগোতে চলমান অভিবাসন অভিযানে এক মাসে এক হাজারের বেশি মানুষ গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যেই ম্যাচ স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত আসে। এমনকি ম্যাচের দুই ঘণ্টা আগে মাত্র ২৫ ডলারে টিকিট বিক্রি হচ্ছিল। যা মেসির কোনো খেলায় বিরল ঘটনা। শুরুতে স্টেডিয়াম প্রায় অর্ধেক খালি থাকলেও ম্যাচ যত এগিয়েছে, দর্শক তত বেড়েছে।
এ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৩ নম্বর দল আর্জেন্টিনা এবং ১৫৫ নম্বর পুয়ের্তো রিকো। যাদের দলে ছিলেন এমনকি কিছু কলেজ পড়ুয়া খেলোয়াড়ও। গোলরক্ষক সেবাস্তিয়ান কাটলার দ্বিতীয়ার্ধে মেসির এক হেড ও ৭৪তম মিনিটে তার বাঁ পায়ের শট অবিশ্বাস্যভাবে রুখে দেন। তিনি বর্তমানে ভিলানোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড়। অন্যদিকে মিডফিল্ডার নোয়েহ হার্নান্দেজ খেলছেন ডিপলের হয়ে।
পুয়ের্তো রিকোও একবার আর্জেন্টিনার ডিফেন্সে চাপ তৈরি করেছিল। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে লেয়ান্দ্রো আনতোনেত্তির প্রায় মাঝমাঠ থেকে নেওয়া লং শটটি এমিলিয়ানো মার্তিনেজ কোনোভাবে বাঁচান। না হলে সেটিই হতে পারত এক অবিশ্বাস্য গোল।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই প্রীতি ম্যাচ খেলছে আর্জেন্টিনা। আগামী বছর জুন থেকে জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় বসবে বিশ্বকাপের আসর। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও হুমকি দিয়েছেন, “বিক্ষোভপূর্ণ এলাকা”র কিছু ভেন্যু থেকে ম্যাচ সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। যার মধ্যে বোস্টনের উপশহরের কিছু ম্যাচও রয়েছে।
যা-ই হোক, মাঠে তুমুল আলো ছড়িয়েছেন লিওনেল মেসি। তার নিখুঁত পাস, গতির ছন্দ আর সৃজনশীলতায় যেন আবারও মনে করিয়ে দিলেন; তিনি শুধু একজন খেলোয়াড় নন, ফুটবলের কবি।