আন্তর্জাতিক ডেস্ক || মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে লক্ষ্য করে অশ্রাব্য ভাষায় কঠোর সমালোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা কমাতে মাদুরোর বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার খবর প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে অশ্লীল চার-অক্ষরের একটি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন ট্রাম্প। খবর রয়টার্সের।
সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর থেকে ভেনেজুয়েলার উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাদক পাচার দমনের নামে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার একটি নৌকায় মার্কিন নৌবাহিনীর হামলায় আরো দুজন নিহত হয়েছেন। তার আগে পাঁচটি হামলায় অন্তত ২৭ জন নিহত হন।
জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, মাদক পাচারের নৌকাগুলো ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সম্পর্কিত। তিনি মাদুরোর বিরুদ্ধে সরাসরি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনেছেন। এদিকে ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য মাদুরো বড় ধরনের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন, যার মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদও রয়েছে। এমন খবর প্রসঙ্গে শুক্রবার হোয়াইট হাউজে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আপনি ঠিক বলেছেন। তিনি সব কিছু প্রস্তাব করেছেন। জানেন কেন? কারণ তিনি (মাদুরো) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অশ্লীলতা করতে চান না।” এই বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রাম্প অশ্লীল চার-অক্ষরের ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন।
ভেনেজুয়েলার যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। তবে ভেনেজুয়েলার সরকার মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আলোচনার সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোকে হাস্যকর বলেছে।
ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেলসি রদ্রিগেজ বৃহস্পতিবার টেলিগ্রামে মাদুরোর সঙ্গে একটি সেলফি পোস্ট করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে শীর্ষ কর্মকর্তাদের ষড়ষন্ত্রের খবরকে ‘মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেন।
গত বুধবার, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএকে ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর অনুমোদন দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। প্রকাশ্যে ট্রাম্পের এই স্বীকারোক্তি কারাকাসে জল্পনা আরো বাড়িয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টা করছে।
মাদুরো মাদক চোরাচালানের সঙ্গে কোনো সংযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি মাদকবিরোধী অভিযানের নামে এ অঞ্চলে মার্কিন হামলাকে দেশটির সার্বভৌমত্ব ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে সমালোচনা করেছেন।
গত বছরের বিতর্কিত নির্বাচনের পর ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাদুরোর বৈধতা আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত হয়। ট্রাম্প প্রশাসনও মাদুরোর সরকারকে ভেনেজুয়েলার ‘বৈধ সরকার’ বলে মনে করে না। মার্কিন কর্মকর্তারা মাদুরোর বিরুদ্ধে ‘কার্টেল অব দ্য সানস’ নামের একটি মাদকচক্র পরিচালনার অভিযোগ এনে তার গ্রেপ্তারে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তবে মাদুরো এসব অভিযোগ অস্বীকার করে একে ‘আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।