1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
লক্ষ্মীপুরে আলোচিত মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা গ্রেপ্তার - দৈনিক প্রথম ডাক
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১২ পূর্বাহ্ন

লক্ষ্মীপুরে আলোচিত মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা গ্রেপ্তার

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১০৬ বার দেখা হয়েছে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আলোচিত মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। হত্যার নয়দিনের মাথায় এই জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয় তারা।

নিহতরা হলেন রামগঞ্জের সোনাপুর বাজারের ক্রোকারিজ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের স্ত্রী জুলেখা বেগম (৫৫) ও তার মেয়ে কলেজছাত্রী তানহা মীম (১৯)। মীম রামগঞ্জ মডেল কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

এর আগে, গত ৯ অক্টোবর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম শ্রীরামপুর গ্রামে ক্রোকারিজ ব্যবসায়ীর স্ত্রী ও কলেজপড়ুয়া মেয়েকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ সময় ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করে নেয় আসামিরা।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হত্যায় জড়িত মূলহোতা নিহত মীমের ফুফাতো ভাই পারভেজকে লুণ্ঠিত স্বর্ণালঙ্কারসহ ঢাকা তুরাগ থানাধীন মনিরের গ্যারেজ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার পারভেজ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, “রামগঞ্জ থানায় মা ও মেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মূলহোতা পারভেজ মীমের ফুফাতো ভাই। পারভেজ ২ মাস আগে সৌদি আরব থেকে লক্ষ্মীপুরে আসেন। গত ২ মাস ধরে প্রচণ্ড আর্থিক সঙ্কটে ছিলেন তিনি। একদিকে এনজিও থেকে নেওয়া লোনের কিস্তি, অন্যদিকে ব্যাংকে রাখা নিজের টাকা তুলতে পারছিলেন না তিনি।”

তিনি বলেন, “অভাবের তাড়নায় পারভেজ মামার বাসা রামগঞ্জ থেকে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসার চিন্তা করেন। গত ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) রামগঞ্জ থেকে একটি চাকু কিনে দুপুর ৩টা থেকে সোয়া ৩টার মধ্যে তিনি মামার বাড়িতে প্রবেশ করেন। প্রথমে মামী ও মামাতো বোন মীম তাকে আমড়া ও আপেল খেতে দেয়। তারপর তিনি মীমের সঙ্গে বাসার দ্বিতীয় তলায় যান। মীম তার সঙ্গে থাকা চাকু দেখে চিৎকার করলে তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। তার মামাকে বলে দিতে পারে এই ভয়ে পারভেজ মীমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ও গলায় চাকু দিয়ে অনেকগুলো আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।”

তিনি আরো বলেন, “ওই সময় তার মামী নিচে ছিলেন। মামী কানে কম শুনতেন। মামীকে নিচে এসে পারভেজ বলেন, ‘মীম আপনাকে দ্বিতীয় তলায় ডাকে। মামী উপরে গেলে পিছনে থেকে প্লেট নিয়ে মাথায় আঘাত করে। মামী পড়ে গেলে টি-টেবিল দিয়ে আবার আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ঘাড়ে ও গলায় চাকু দিয়ে আঘাত করেন। তারপর রুমে থাকা শাবল দিয়ে আলমারী খুলে সেখানে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ব্যাগে নেন এবং শাবল, চাকু, আপেল, আমড়া পুকুরে ফেলে দিয়ে বেরিয়ে আসেন।”

পুলিশ সুপার বলেন, “আসার পূর্বে পারভেজ জামা ও প্যান্ট খুলে ব্যাগে নেন এবং মামাতো ভাইয়ের প্যান্ট ও গেঞ্জি পরে বের হন। পরে রামগঞ্জের একটি খালে জামার ব্যাগটি ফেলে দেন। পারভেজ মামার বাসা থেকে বের হওয়ার ১০-১৫ মিনিট পর মাগরিবের আযান হয়। পরে তিনি সরাসরি লক্ষ্মীপুরে তার শ্বশুর বাড়িতে চলে আসেন। পারভেজ মামাতো ভাইয়ের গেঞ্জি তার শ্বশুর বাড়ির খাটের নিচে রাখেন এবং প্যান্ট বাহিরে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেন। পরবর্তীতে লক্ষ্মীপুরের দুটি দোকানে অনুমানিক ১ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেন। বাকি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ঢাকায় গেলে সেখানে অনুমানিক ৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কারসহ লক্ষ্মীপুর জেলার ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।”

পুলিশ সুপার আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হওয়ার পর থেকে রামগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে ও ডিবির একটি টিম পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তদন্ত কাজে সহায়তা করে। নিবিড় তদারকীর মাধ্যমে তদন্তকালে বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্য, পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্য, প্রযুক্তিগত প্রমাণ ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে মামলার রহস্য উদঘাটনসহ আসামি গ্রেপ্তারে সক্ষম হয় পুলিশ।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT