খেলাধুলা প্রতিবেদক || মাঠের ক্রিকেটে খারাপ সময় কাটানো বাংলাদেশ মাঠের বাইরেও অপ্রীতিকর নানা ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর দেশে ফিরে সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন তারা।
বিমানবন্দরে ভুয়া-ভুয়া স্লোগান, পরিবার তুলে গালাগাল চলতে থাকে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বরাবরের মতো এবারও একই কাজ চলতে থাকে।
এর বাইরেও ব্যাট হাতে খারাপ সময় কাটানো জাকের আলীকে টার্গেট বানিয়ে ছোঁড়া হয় বর্ণবাদী মন্তব্য। যা চোখে পড়েছে বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্সের। বর্ণবাদী এসব মন্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে সাফ জানিয়ে দিলেন সিমন্স।
‘‘একটি কথা বলতে চাই, ক্রিকেটারদের প্রতি কোনো ধরনের বর্ণবিদ্বেষী সুর কোনোভাবেই থাকা ভালো কিছু নয়। আপনি যেখান থেকেই আসেন না কেন, আই ডোন্ট কেয়ার। কিন্তু জাকের আলীর প্রতি যা হয়েছে, সেসবে আমি ক্ষুব্ধ। ভালো কিছু নয় এসব।’’
সিমন্সকে সংবাদ সম্মেলন শেষে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, সমর্থকরা নয় জাকের আলীকে সর্বপ্রথম বর্ণবাদীয় মন্তব্য করেছিলেন জাতীয় দলের বর্তমান সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বিপিএল চলাকালীন এক সংবাদ সম্মেলনে জাকের আলীকে কেন জাতীয় দলের জন্য বিবেচনা করা হয় না সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ছেলেটার হয়তো চেহারা একটু কালো, এই কারণে আমার মনে হয় বোর্ডও (বিসিবি) তাকে দেখে না ঠিকমতো।’’
সালাউদ্দিনের এই মন্তব্যের বিষয়ে সিমন্স বলেন, ‘হ্যাঁ! আমি জানি সালাউদ্দিন এমন বলেছিল। তবে এর মানে এই না যে, গ্যালারি থেকেও এসব বলার অধিকার পেয়ে যাবে।’’
পরে যখন সিমন্সকে আবার বলা হয়, শুরুটা হয়েছিল সালাউদ্দিনকে দিয়ে। তখন কোচ পাল্টা বলেছেন,‘‘আপনার কথাতেও যুক্তি আছে।’’
পরিস্থিতি, পরিবেশ যেমনই থাকুক সিমন্স চান ক্রিকেটারদের পাশে থাকতে। তাদের আগলে রাখতে। এজন্য ক্রিকেটারদেরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থকদের পাল্টা জবাব কিংবা প্রতিক্রিয়া দেখানো থেকে শুরু থাকতে বললেন, ‘‘প্রথমত বলতে চাই, সামাজিক মাধ্যমে কী হচ্ছে, এসব নিয়ে ক্রিকেটারদের কিছু করার আছে বলে আমি একদমই মনে করি না। ব্যক্তি হিসেবে সবারই অধিকার আছে সামাজিক মাধ্যমে যা ইচ্ছা বলার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও জাতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আমার ক্রিকেটারদের অবশ্যই উচিত নয় এসবের জবাব দেওয়া।”
বিমানবন্দরের ঘটনার পর নাঈম শেখ নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। যার সারমর্ম ছিল এরকম, ‘‘ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়।’’ সেই পোস্টেও তীব্র সমালোচনার শিকার হতে হয় তাকে। এসব থেকে সিমন্স দূরে থাকতে বললেন ক্রিকেটারদের, ‘‘আমি চাই না আমার ক্রিকেটাররা সামাজিক মাধ্যমে কোনো ধরনের জবাব দিক।”