চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধ || চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত স্পিরিট পানে মারা যাওয়া সাতজনের মধ্যে চারজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা মনির উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো উত্তোলন করা হয়।
যাদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে তারা হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদরের পিরোজখালি গ্রামের নবীছউদ্দিনের ছেলে লাল্টু হোসেন, খেজুরা গ্রামের মৃত দাউদ আলীর ছেলে সেলিম, নফরকান্দি গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে খেদের আলী এবং শংকরচন্দ্র গ্রামের শহিদুল মোল্লা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা মনির জানান, আদালতের নির্দেশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো কবর থেকে তোলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
গত ৯ অক্টোবর দিবাগত রাতে সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন বিষাক্ত স্পিরিট পান করেন। এরপর একে একে তারা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বাড়িতে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। জানা যায়, মারা যাওয়াদের মধ্যে চারজনকে গোপনে দাফন করেন পরিবারের সদস্যরা। আদালতের নির্দেশে আজ ওই চারজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তোলা হয়েছে।
মারা যাওয়া সাতজন হলেন- চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নফরকান্তি গ্রামের পূর্বপাড়ার ভ্যানচালক খেদের আলী, খেজুরা হাসপাতাল পাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম, পিরোজখালি স্কুলপাড়ার ভ্যানচালক লালটু হোসেন, শংকরচন্দ্র মাঝেরপাড়ার শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ, ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির, ডিঙ্গেদহ এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লালটু এবং হায়াত আলী (৪৫)।
এদিকে, এই মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় ব্যবহৃত বিষাক্ত স্পিরিটের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১১৭ বোতল মেয়াদোত্তীর্ণ স্পিরিট।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আলী হুসাইন জানান, মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঝিনাইদহ জেলা থেকে মূল আসামি ফারুক আহমেদ ওরফে এ্যালকো ফারুক (৪০) এবং তার সহযোগী জুমাত আলীকে (৪৬) গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক স্বীকার করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্সবিহীনভাবে হোমিও চিকিৎসার নামে মেয়াদোত্তীর্ণ স্পিরিট বিক্রি এবং চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতেন।
পুলিশের ধারণা, ফারুকের সরবরাহ করা এই বিষাক্ত স্পিরিট পান করেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।