খেলাধুলা ডেস্ক || বার্সেলোনার মঙ্গলবার রাতটা হয়ে গেল এক তরুণের নামের আলোয়। ২২ বছর বয়সী ফারমিন লোপেজ যেন নিজেই লিখলেন ক্যাম্প ন্যুর গল্প। তিনি একাই করলেন তিন গোল। সঙ্গে মার্কাস র্যাশফোর্ডের জোড়া গোল। তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোসকে বিধ্বস্ত করে ৬-১ গোলের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে কাতালানরা।
তবে ম্যাচে নাটকও ছিল কম নয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এক বিতর্কিত লাল কার্ড নিয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়ে অলিম্পিয়াকোস।
খেলার মাত্র সপ্তম মিনিটেই গোলের দেখা পায় বার্সা। লামিন ইয়ামালের শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল ধরে বজ্রগতিতে জালে পাঠান ফারমিন। সেখান থেকেই শুরু তার গোল উৎসব।
৩৯তম মিনিটে দুর্দান্ত এক পাল্টা আক্রমণ থেকে দ্বিতীয় গোলটি করেন এই তরুণ মিডফিল্ডার। পেদ্রির নিখুঁত পাস থেকে ১৭ বছরের ড্রো ফের্নান্দেজ ফারমিনকে দারুণভাবে বল বাড়ান। আর ফারমিন ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ৫০ মিনিটে আয়োব এল কাবির হেডে বল জালে জড়ায়। কিন্তু ভিএআর দেখায় অফসাইড! ঠিক পরের মুহূর্তেই ভিডিও রিভিউ থেকে ধরা পড়ে এরিক গার্সিয়ার হাতে বল লেগেছে। এবার রেফারি দেন পেনাল্টি, আর সেই সুযোগে ৫৪ মিনিটে গোল করে ব্যবধান কমান এল কাবি (২-১)।
কিন্তু সেই স্বপ্ন বেশিক্ষণ টিকল না। মাত্র তিন মিনিট পর, ৫৭ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন সান্তিয়াগো হেজ্জে। রিপ্লেতে দেখা যায়, আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার প্রতিপক্ষের মুখে সামান্য ছোঁয়াই দিয়েছিলেন। তবু সিদ্ধান্ত বদলের সুযোগ ছিল না। কারণ দ্বিতীয় হলুদে ভিএআর হস্তক্ষেপ করতে পারে না। ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে পুরো অলিম্পিয়াকোস দল ও তাদের কোচ।
১০ জনের দলে পরিণত হওয়া অলিম্পিয়াকোসের ওপর তখন ঝড় বইয়ে দেন বার্সার ফরোয়ার্ডরা। ৬৮ মিনিটে র্যাশফোর্ডকে বক্সে ফেলে দেওয়া হলে স্পট কিকে গোল করেন ইয়ামাল (৩-১)।
এরপর র্যাশফোর্ড নিজেও নাম লেখান স্কোরশিটে, বক্সের ভেতর থেকে নিখুঁত শটে করেন চতুর্থ গোল (৪-১)।
৭৯ মিনিটে ফারমিন সম্পন্ন করেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক। একটি নিখুঁত পাল্টা আক্রমণে জালে জড়ান বল। ম্যাচের শেষের দিকে র্যাশফোর্ডও করেন আরেকটি গোল। আর তাতেই অলিম্পিয়াকোসের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে বার্সেলোনার ৬–১ গোলের দাপুটে জয় পায়!
ম্যাচ শেষে ফারমিন বলেন, “বার্সার হয়ে এটা আমার প্রথম হ্যাটট্রিক। স্বপ্নপূরণের মতো অনুভূতি। শনিবার রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এল ক্লাসিকোর আগে এমন জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা শুধু আমাদের নয়, পুরো ক্লাব ও সমর্থকদের জন্য দারুণ কিছু।”