1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে মা, ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে গিয়ে বাবা-ভাই কারাগারে - দৈনিক প্রথম ডাক
শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে মা, ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে গিয়ে বাবা-ভাই কারাগারে

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪১ বার দেখা হয়েছে
হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ভুক্তভোগী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি || পঞ্চগড়ের বোদায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করতে থানায় গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন ভুক্তভোগীর বাবা, ভাই ও চাচা। অভিযুক্তকে মারধরের ঘটনায় হওয়া মামলায় তাদের আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় দুইটি পৃথক মামলা হয়েছে। দুই পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী শিশু বর্তমানে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালের দোতলার বারান্দার বিছানায় মেয়েকে নিয়ে অবস্থান করছেন তার মা।

বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, “আগে মারধরের শিকার ব্যক্তি মামলা করেছেন। পরে শিশুটির বাবাসহ তিনজন ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে আসলে তাদের মামলটিও নেওয়া হয়। তারা যেহেতু আসামি, তাই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি।”

একটি মামলার বাদী ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত আশিকুজ্জামান মানিক। তিনি বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য। অপর মামলাটি করেছেন ধর্ষণচেষ্টার শিকার দাবি করা শিশুটির পরিবার।

ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের অভিযোগ, গত সোমবার দুপুরে মানিকের বাড়িতে টিভি দেখতে যায় শিশুটি। সেখান থেকে ফেরার সময় বাড়ির একটি গলিতে মেয়েটির মুখ চেপে ধর্ষণচেষ্টা করেন মানিক। শিশুটি কোনমতে ছুটে বাড়ি গিয়ে তার মাকে বিষয়টি জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়।

পরিবারটির দাবি, রাতে থানায় অভিযোগ করতে গেলে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের লোকজন শিশুটির পরিবারের সদস্যদের হাত থেকে অভিযোগের কাগজটি নিয়ে ছিড়ে ফেলেন। মামলার এজাহার জমা দিতে গিয়ে উল্টো গ্রেপ্তার হন শিশুটির বাবা, ভাই ও চাচা। মঙ্গলবার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগীকে প্রথমে বোদা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্স ও পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের বারান্দায় শিশুটির মা বলেন, “আমার মেয়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে উল্টো পুলিশ আমার ছেলে, স্বামী ও তার ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা সবার সামনে আমাদের অভিযোগ ছিড়ে ফেলেছে। আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমি কি আমার মেয়ের ওপর নির্যাতনের ন্যায়বিচার পাব না?”

অভিযোগ অস্বীকার করে আশিকুজ্জামান মানিক জানান, তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনার দিন টিভি বন্ধ করে ঘাস কাটতে গেলে পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামিরা তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অমানবিকভাবে মারধর করে। এমনকি তার স্ত্রী সন্তানদের ওপরেও হামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

আশিকুজ্জামান মানিক বলেন, “তারা আওয়ামী লীগের সময় মানুষের জমি দখল করেছিল। সরকার পতনের পর এলাকার মানুষকে নিয়ে সেই জমি উদ্ধার করা হয়। এ কারণে তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। আমাকে পরিকল্পিতভাবে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মারধর করেছে। আমি এখন রংপুরে চিকিৎসাধীন। আমার একটা চোখ নষ্টের পথে। আমার ওপর নির্যাতন দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ ফোন দেয়। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। আমার ওপর হওয়া হামলার বিচার চাই।”

বোদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।”

ময়দানদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান রাফি বলেন, “মানিক আমার জানামতে ভালো ছেলে। তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি আমার কাছে অসত্য মনে হয়, তারপরও তদন্তের ব্যাপার রয়েছে।”

বোদা থানার ওসি আজিম উদ্দিন বলেন, “পূর্ব শত্রুতার জেরে মব সৃষ্টি করে মানিককে মারধর করে আধমরা করা হয়। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে স্থানীয়রা সহায়তা চাইলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আগে মানিক মামলা করেছেন। পরে শিশুটির বাবাসহ তিনজন ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে আসলে তাদের মামলটিও নেওয়া হয়। তারা যেহেতু আসামি, তাই আমরা তাদের গ্রেপ্তার করেছি। এখানে মামলার এজাহার ছেড়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT