1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
গবির ক্যান্টিনে ইঁদুর, পচা খাবারে ভরা ফ্রিজ - দৈনিক প্রথম ডাক
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৫ অপরাহ্ন

গবির ক্যান্টিনে ইঁদুর, পচা খাবারে ভরা ফ্রিজ

গবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
  • ৪৭ বার দেখা হয়েছে
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের ভাত রাখার ঝুড়িতে ইঁদুরের ছানা ও ফ্রিজে পচা খাবার।

গবি প্রতিনিধি || গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) ক্যান্টিন নিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসম্মত খাবার না পাওয়া, দাম ও খাবারের পরিমাণে অসঙ্গতি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

বারবার ক্যান্টিনের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হলেও সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। এমনকি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখেও পরিস্থিতির উন্নতি দেখা যায়নি। তবে এবার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অভিযোগ আর ক্ষোভ—দুটিই ফুঁসে উঠেছে নতুন করে।

দীর্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (২২ অক্টোবর) দিনভর দুই দফায় অভিযান চালায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা। অভিযানে দেখা যায়, ক্যান্টিনের পুরো পরিবেশ নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর।

সরেজমিনে দেখা যায়, চরম অব্যবস্থাপনা। নোংরা-দুর্গন্ধযুক্ত ফ্রিজে একইসঙ্গে সংরক্ষণ করা হচ্ছে কাঁচা মাংস ও বাসি ভাত। পলিথিন ফেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বাসি তরকারি। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনের জন্য এসব খাবার রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্যাঁতসেঁতে স্থানেই চলছে খাবার রান্নার কাজ। রান্নাঘর ভেজা ও দুর্গন্ধময় এবং কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না রাঁধুনিরা। ভাত রাখার বাঁশের ঝুড়িতে পাওয়া গেছে ইঁদুর ও মাকড়সার জাল।

এর আগেও ক্যান্টিনের খাবারে প্লাস্টিক, পোকা, মুরগির পেখম এবং পানিতে ময়লা পাওয়া গিয়েছিল। সে সময় কর্মচারীদের টুপি, গ্লাভস পরা ও খাবার ঢেকে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। সমস্যার সমাধান তো হয়ইনি, বরং ক্যান্টিনের অব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে আরো ভয়াবহ হয়েছে।

ক্যান্টিনের সার্বিক বিষয় নিয়ে ক্যান্টিন মালিক আরশাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

তিনি বলেন, “আমি কোনো কথা বলবো না। আমি ক্যান্টিন ছেড়ে দেব। ভার্সিটিতে চিঠি দিয়েছি, আপনারা তাদের সঙ্গে কথা বলেন।”

বাসি-পঁচা ভাত-তরকারি সংরক্ষণের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি নির্বিকারভাবে বলেন, “বাসি খাবার তো খাওয়াই যায়। আমরাও খাই।”

গকসুর সমাজকল্যাণ ও ক্যান্টিন-বিষয়ক সম্পাদক বলেন, “ছাত্র সংসদের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ক্যান্টিনে আসা হয়েছে। এখানে একই ফ্রিজে রান্না করা খাবার ও কাঁচা খাবার রাখা হয়েছে। আমরা বলেছি ফেলে দিতে, কিছুক্ষণ পর আবার মনিটরিং করা হবে। যদি তারা ঠিক না করে আজ থেকেই ক্যান্টিন বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

তিনি বলেন, “নির্বাচনের পর আমরা কয়েক বার এসেছি। তাদের সমস্যা জানতে চাওয়া হয়েছে, পরিষ্কারের বিষয় নিয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।”

ক্ষোভ প্রকাশ করে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী হামিম মন্ডল বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে যদি শিক্ষার্থীরা নিরাপদ খাবার না পায়, তাহলে অন্যদের কাছে আমরা কীভাবে সচেতনতার কথা বলব? প্রতিদিন আমরা এখানকার খাবার খাই বাধ্য হয়ে। কিন্তু খাবারের মান এমন যে, কখনো কখনো না খেয়ে থাকাই ভালো মনে হয়। অভিযোগ জানিয়ে কোনো ফল মেলে না, সবই যেন নিয়মের অংশ হয়ে গেছে।”

এ বিষয়ে ক্যান্টিন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম বলেন, “আজকে আমাদের কাছে কোনো চিঠি তারা জমা দেননি। গত ৪ সেপ্টেম্বর ক্যান্টিন মালিক ক্যান্টিন ছেড়ে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছিল এবং আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছিল।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা প্রশাসন, ক্যান্টিন কমিটি ও ছাত্র সংসদের সদস্যবৃন্দ আগামী রবিবার (২৬ অক্টোবর) আলোচনা করে ক্যান্টিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT