খেলাধুলা প্রতিবেদক || অন্তত পাঁচ দল নিয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ আয়োজন করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এজন্য দল চেয়ে দরপত্র আহ্বান করছিল বিসিবি। ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করার শেষ সময় ছিল ২৮ অক্টোবর বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। তবে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আবেদন পত্র জমা নিয়েছে বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল।
পাঁচ বছরের জন্য বিপিএলে দল নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে ১০টি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান মিঠু। ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য সম্ভাব্য ১০টি এলাকা নির্বাচন করেছিল বিসিবি। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, রংপুর ও কুমিল্লা নামে ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার সুযোগ ছিল।
ইফতেখার রহমান জানিয়েছেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে আবেদন পড়েছে রংপুর, ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, রাজশাহী, নোয়াখালী, বরিশাল ও সিলেটের নামে। রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে দুইটি প্রতিষ্ঠান। তবে একমাত্র ময়মনসিংহ বিভাগের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আবেদন করেনি।
রংপুরকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য পেতে চায় রংপুর রাইডার্স। এর আগেও লম্বা সময় ধরে তারা ক্রিকেটের সঙ্গেই ছিল। তাদেরকে দল দিতে কোনো আপত্তিও নেই বিসিবির। এবারের আসরের জন্য আরো চারটি দল বাছাই করাই বিসিবির কাছে মূল চ্যালেঞ্জ।
পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মধ্যে মাইন্ড ট্রি খুলনা টাইগার্সের মালিকানা ধরে রাখতে চায়। রংপুর ও খুলনার সঙ্গে আছে চিটাগং কিংসও। ১১ বছরের বিরতির পর গত আসরে বিপিএলে ফেরে তারা। এসকিউ স্পোর্টস চিটাগংয়ের মালিকানা চায়। ঢাকার মালিকানা পেতে আগ্রহ দেখিয়েছে গতবারের মালিকানা কেনা ঢাকা ক্যাপিটালস। গতবার রিমার্ক হারল্যান গ্রুপ দলটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল। এবার কারা থাকছে তা নিয়ে অনেক জল্পনা চলছে।
কুমিল্লার জন্য এসএস গ্রুপ, সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য জে এম স্পোর্টস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট, নোয়াখালীর জন্য বাংলা মার্ক লিমিটেড আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাজশাহী দলটিকে পেতে দুটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। একটি নাবিল গ্রুপ ও অন্যটি দেশ ট্রাভেলস। এছাড়া পুরোনো দল বরিশালের জন্য নতুন প্রতিষ্ঠান আকাশবাড়ী হলিডেজ আগ্রহ দেখিয়েছে।
ফ্রাঞ্চাইজি নির্বাচনে বিসিবি জিরো টলারেন্স নীতি দেখাবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইফতেখার আহমেদ, ‘‘গত বছর আমাদের যে কঠিন সময় গেছে… অনেক খেলোয়াড় টাকা পায়নি, বাসের টাকা পায়নি এসব যাতে না হয়। এটা হচ্ছে আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার। সভাপতি সাহেব এবং আমাদের লক্ষ্য এরকম বিব্রতকর অবস্থায় আমরা যাতে আর না পড়ি। সেটার জন্য আমার প্রোটেকশন নিতেই হবে। এজন্য আপনারা জানেন ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি চেয়েছি। কারণ ধরেন পেমেন্টটা যদি না দেয় তাহলে আমরা ব্যাংক গ্যারান্টি থেকে এনক্যাশ করে দিয়ে দিব।’’
বিপিএলে কয়টা ফ্র্যাঞ্চাইজি দেয়া হচ্ছে এবং কারা দায়িত্ব পাচ্ছেন তাদের তালিকা ২ নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করবে বিসিবি। এ প্রসঙ্গে ইফতেখার মিঠু বলেন, ‘‘আজকে আপনাদের জানিয়ে দিব কারা কারা জমা দিয়েছে। তারপর কালকে নানান ইস্যুতে চিঠি দিব ওদের। যেরকম পে-অর্ডারটা দিয়েছে এটা সঠিক কিনা আমাদের তো দেখতে হবে। এগুলো সব আমরা করব। তারপর আমাদের অ্যান্টি করাপশনে যারা ওই কোম্পানিতে জড়িত আছে তাদের নাম পাঠাতে হবে। অনেক প্রসিডিউর আছে। এটা ২ তারিখের মধ্যে ইনশাআল্লাহ আমরা জানিয়ে দিব।’’
এ বছর ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার জন্য আগ্রহীদের দুই কোটি টাকার পে-অর্ডার জমা দিতে হবে। যা প্রথম বছরের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি হিসেবে কাউন্ট করা হবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি প্রতি বছর ১৫% করে বৃদ্ধি পাবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া যাবে পাঁচ বছরের জন্য। এর বাইরে ব্যাংক গ্যারান্টিও দিতে হবে। ছয় মাসের জন্য ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে হবে। দল চূড়ান্ত হয়ে গেলে ১৭ নভেম্বর বিপিএলের প্লেয়ার্সের ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে।