আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে কমপক্ষে ৬০ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় চার পুলিশ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ব্রাজিলের রাজধানীর নিম্ন-আয়ের ফাভেলা কমপ্লেক্স আলেমাও এবং পেনহা এলাকা পরিণত হয় এক ভয়াবহ সংঘর্ষের ময়দানে। পুলিশের ব্যাপক অভিযানে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ‘যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি’ হিসেবে।
দেশটির প্রধান মাদক চক্রকে দমন করতে এই অভিযানে প্রায় ২ হাজার ৫০০ জন সশস্ত্র পুলিশ সদস্য অংশ নেন। তাঁদের সঙ্গে ছিল হেলিকপ্টার, ড্রোন, সাঁজোয়া যান ও ধ্বংসযন্ত্র। পুলিশ জানিয়েছে, দুইটি হেলিকপ্টার, ৩২টি সশস্ত্র গাড়ি এবং ১২টি ডেমোলিশন যন্ত্র ব্যবহার করে এলাকার মুখে থাকা ব্যারিকেডগুলো ভাঙা হয়।
রাজ্য গভর্নর ক্লাউডিও কাস্ত্রো এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি রাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিযান।” তিনি জানান, এ অভিযানে ৬০ জন সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্য ও চারজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত অভিযান চলেছে।
রাজ্য গভর্নর আরো উল্লেখ করেন, “অভিযানের সময় ৮১ জনকে আটক করা হয়েছে এবং অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। অভিযানের লক্ষ্য ছিল রিও ডি জেনিরো এবং ব্রাজিলকে অপরাধমুক্ত করা। আমরা পিছু হটবো না, কারণ জননিরাপত্তা আমাদের মূল অগ্রাধিকার।”
এই অভিযানে রেড কমান্ডো নামের মাদকচক্রকে লক্ষ্য করা হয়। রিও ডি জেনিরোর অনেক এলাকায় এই চক্রের প্রভাব রয়েছে।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি এই বড় আকারের পুলিশ অভিযান এবং মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন এবং নিহতদের দাফনের সমস্যায় পড়েছেন।
গত বছর রিওতে পুলিশের অভিযানে প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছিলেন। রিও রাজ্য আইনসভা মানবাধিকার কমিশনের প্রধান দানি মন্টেইরো বলেন, “রিওর ফাভেলাগুলো আবারও যুদ্ধের মঞ্চে পরিণত হয়েছে।”
আগামী সপ্তাহে রিও ডি জেনিরোতে আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং নভেম্বর থেকে আমাজনের বেলেমে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন-৩০ অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনে বিশ্বনেতারা অংশ নেবেন। পুলিশি অভিযানকে এই বৈশ্বিক ইভেন্টের প্রেক্ষাপটেও দেখা হচ্ছে।