নিজস্ব প্রতিবেদক || শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদকে প্রমোদতরি হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন পর প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে এটিকে প্রমোদতরী হিসেবে পুনরায় চালুর সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নৌ উপদেষ্টা এম. সাখাওয়াত হোসেন প্রধান উপদেষ্টাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব নূরুন্নাহার চৌধুরী এবং বিআইডব্লিউটিসি চেয়ারম্যান সলিম উল্লাহ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের বৈচিত্র্যপূর্ণ নৌকার ডিজাইন বিশ্বজুড়েই বিখ্যাত। অথচ আমাদের নতুন প্রজন্ম এ ঐতিহ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না। প্যাডেল স্টিমারসহ যত পুরোনো নৌযান আছে, সব সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বিআইডব্লিউটিসি কর্মকর্তারা জানান, সংস্কার শেষে পি এস মাহসুদ দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে। সেখানে থাকবে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, বাংলা গান ও সংস্কৃতির নানা আয়োজন।
তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সপ্তাহের সাতদিনই স্টিমারটি চলবে—৫ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রা ছাড়াও ২-৩ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরের ব্যবস্থা থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, “এই প্যাডেল স্টিমারগুলো শুধু যাতায়াতের মাধ্যম নয়, ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। যাত্রীরা যেন এর গল্প জানতে পারে—কবে তৈরি, কীভাবে, তখনকার দিনে কত আনা ভাড়া ছিল সব তথ্য সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে।”
এ সময় নৌ উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “পি এস মাহসুদ শুধু একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক—একসময় নদীপথই ছিল আমাদের যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।”
তিনি জানান, পি এস মাহসুদের পাশাপাশি পি এস অস্ট্রিচ ও পি এস লেপচাসহ অন্যান্য পুরোনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রামের কাপ্তাই লেকে একটি স্টিমার প্রমোদতরী চালুর বিষয়েও আলোচনা চলছে।