1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
রাজশাহীর রাজবাড়ী ভাঙার কাজ বন্ধ করল প্রশাসন - দৈনিক প্রথম ডাক
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০৮ অপরাহ্ন

রাজশাহীর রাজবাড়ী ভাঙার কাজ বন্ধ করল প্রশাসন

রাজশাহী প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১৪০ বার দেখা হয়েছে
রাজশাহী নগরের সিপাইপাড়া এলাকায় অবস্থিত প্রাচীন বাড়িটির প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব থাকায় ভাঙা বন্ধ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রাজশাহী প্রতিনিধি || রাজশাহী নগরের সিপাইপাড়া এলাকায় অবস্থিত দিঘাপতিয়ার রাজবংশের রাজা হেমেন্দ্র নারায়ণ রায়ের ছেলে সন্দীপ কুমার রায়ের বাড়িটি আর না ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের কর্মচারীরা গিয়ে ভাঙার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

অবশ্য পাশাপাশি দোতলা দুটি বাড়ির প্রায় সবই ভেঙে ফেলা হয়েছে। শুধু মেঝের নিচে থাকা সুড়ঙ্গের ইটগুলো তোলা বাকি আছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে বাড়িটি পরিদর্শনে গিয়ে হেরিটেজ রাজশাহীর সভাপতি মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘‘এ বাড়ির বয়স আনুমানিক ১২০ বছর। এখন যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখানে থাকা নাগলিঙ্গমের গাছটি যেন না কাটা হয়। এটি খুবই বিরল।’’

মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘‘প্রশাসনের কর্মকর্তারা হয়ত এখানে আসেননি। তারা না দেখে এটা নিলাম দিয়েছেন। তারা এখানে আসলে হয়ত এর প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব বুঝতে পারতেন।’’

তিনি জানান, বাড়ির নিচে সুড়ঙ্গের মতো থাকলেও এটি আসলে সুড়ঙ্গ নয়। এটি প্রাচীন নির্মাণশৈলীর ছাপ। বাড়ির নিচ দিয়ে বাতাস চলাচলের জন্য এটি করা হতো। তবে এ বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত করা কলেজশিক্ষক আকতার বানু মনে করেন, পেছনের দোতলা বাড়ি থেকে সামনের একতলা বাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত ছিল ওই সুড়ঙ্গ। নিরাপত্তার কারণে এটি করা হতে পারে বলে তার ধারণা।

রাজবংশের এ জায়গাটি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের বিপরীত পাশে, প্রধান সড়ক ঘেঁষেই। জনশ্রুতি আছে, পুঠিয়ার মহারাণী হেমন্তকুমারী রাজশাহী এলে এই দোতলা বাড়িতে থাকতেন।

রাজপরিবার চলে যাওয়া পর বাড়িটি পরিত্যক্ত ছিল। স্বাধীনতার পর বাড়িটি ভাষাসৈনিক মনোয়ারা রহমানের নামে ইজারা দেয় সরকার। মনোয়ারা রহমান রাজশাহীর প্রথম নারী উদ্যোক্তা। তিনি এ বাড়িতে মহিলা কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান নামের একটি সংগঠন চালাতেন। এর মাধ্যমে তিনি হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রায় ১০ হাজার নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন।

মনোয়ারা রহমান ২০০৯ সালে মারা গেলে বাড়িটি আবারও পরিত্যক্ত হয়ে যায়। সম্প্রতি এ বাড়ির ইজারা বাতিল করে বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিস। এরপর পরিত্যক্ত বাড়িটি নিলামে বিক্রি করা হয় ১ লাখ ৫২ হাজার টাকায়। নিলামের ক্রেতা শ্রমিকদের দিয়ে দুসপ্তাহ ধরে বাড়িটি ভেঙেছেন। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয়। সমালোচনার মুখে জেলা প্রশাসন বাড়িটি ভাঙার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

বোয়ালিয়া থানা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন বাড়িটি এখন যেভাবে আছে, সেভাবে আপাতত রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুপুরেই আমার অফিস থেকে লোকজন গিয়ে লালসালু টাঙিয়ে দিয়ে এসেছেন। শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করেছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘জায়গাটা নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত ছিল। আপাতত সবকিছুই স্থগিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেয়ালের যেসব ইট ভাঙা হয়ে গেছে, সেগুলো নিলামে নেওয়া ব্যক্তি সরিয়ে নেবে। তারপর আর একটি ইটও তুলতে পারবে না। যেভাবে যা আছে সেভাবে থাকবে। কর্তৃপক্ষ আগে সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তারপর পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে।’’

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT