খেলাধুলা ডেস্ক || এশিয়া কাপের জমজমাট আসরে গ্রুপ পর্বের হিসাবনিকাশ শেষ। এবার শুরু সুপার ফোরের মূল লড়াই। উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। আজ শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই প্রতীক্ষিত দ্বৈরথ।
ভাগ্যের চক্রে বাংলাদেশ:
গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে শেষ চারে টিকে থাকে বাংলাদেশ। তবে নিজেদের পথ সুগম করতে শ্রীলঙ্কার অবদানের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। আফগানদের হারিয়ে লঙ্কানরা যে শুধু সুপার ফোরে উঠল তাই নয়, সঙ্গে বাংলাদেশকেও এনে দিল পরবর্তী ধাপে খেলার সুযোগ।
সাম্প্রতিক লড়াইয়ের স্মৃতি:
গত দুই মাসেই চারবার একে অপরের বিপক্ষে খেলেছে এই দুই দল। লঙ্কানদের মাঠে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। আবার চলতি আসরে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারতে হয়েছে লিটন দাসদের। তাই এবার প্রতিশোধ নেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে টাইগাররা।
ইতিহাসের পাল্লা কার পক্ষে?
টি–টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ২১ বার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। তার মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৮ বার, আর লঙ্কানদের জয় ১৩ বার। তবে এশিয়া কাপের ইতিহাসে পরিসংখ্যান অনেকটাই একপেশে। ১৮ বারের লড়াইয়ে ১৫ জয় শ্রীলঙ্কার, বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ৩ বার। তা সত্ত্বেও ২০১৬ সালের সেই স্মরণীয় জয় কিংবা সাম্প্রতিক সিরিজ সাফল্য আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে টাইগারদের।
মাঠের বাইরের সমীকরণ:
শারীরিক ক্লান্তি এবং ভ্রমণ— দুটোই শ্রীলঙ্কাকে কিছুটা ভোগাতে পারে। কারণ, টানা ব্যস্ত সূচিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে একাধিক ম্যাচ খেলতে হচ্ছে তাদের। সঙ্গে আবুধাবি থেকে দুবাই যাত্রা। বিপরীতে বাংলাদেশকে শেষ ম্যাচের পর চার দিনের বিশ্রাম দিয়েছে সময়। ফলে ফুরফুরে মনোভাব নিয়েই মাঠে নামবে টাইগাররা।
বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হবেন যিনি:
বাংলাদেশের সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে নুয়ান থুসারা। অনন্য স্লিংগিং অ্যাকশনে বল ছাড়েন তিনি, যা ব্যাটারদের জন্য সবসময় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। লাসিথ মালিঙ্গার সময়ে যেমন ভুগতে হতো টাইগারদের, এখন সেই ভূমিকায় ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছেন থুসারা।
গ্রুপ পর্বেই এর প্রমাণ মিলেছে। ইনিংসের শুরুতেই পরপর দুটি আঘাত হেনে বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিলেন এই ডানহাতি পেসার। এর আগেও তার ঝলক দেখা গেছে। গত বছরের মার্চে সিলেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ একাই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি।
সংখ্যার হিসেবে থুসারা যেন আরও ভীতিকর। মাত্র ৬ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে শিকার করেছেন ১৩ উইকেট। সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষেও তিনি একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। ফলে আজকের ম্যাচে টাইগারদের ওপেনারদের ইনিংসের শুরুতেই এই গতিময় পেসারের পরীক্ষায় পড়তে হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ফাইনালের স্বপ্নে প্রথম ধাপ:
সুপার ফোরের প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রুপ পর্বের পয়েন্ট সঙ্গে আসায় বাংলাদেশকে এগোতে হলে জয় দিয়ে শুরু করাটা অপরিহার্য। আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই জয় পেলে শুধু প্রতিশোধই নয়, ফাইনালের দৌড়েও বড় এক ধাপ এগিয়ে যাবে টাইগাররা।