বিনোদন ডেস্ক || জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ওপার বাংলার সিনেমায় অভিনয় করেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। খানিকটা বিরতির পর ফের ভারতীয় বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন চঞ্চল চৌধুরী। ‘শিকড়’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করছেন ব্রাত্য বসু।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই গল্পের সংমিশ্রণে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। বর্তমানে বোলপুরে শুটিং চলছে, এতে অংশ নিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী।
কবিগুরুর মাটিতে প্রথমবার গিয়েছেন চঞ্চল; তাই খানিকটা আবেগাপ্লুত। এ বিষয়ে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, “স্বপ্নের মতো লাগছে। কতবার এই জায়গা আমাকে টেনেছে; আসা হয়নি। বেশ অনেক দিন শুটিং করছি। এখনো ঘুরে দেখা হয়নি। তবে পরিকল্পনা আছে বেশ কিছু জায়গায় যাওয়ার। রবীন্দ্রনাথ তো প্রাণের ঠাকুর। তার মাটিতে এসে ঘুরে না দেখলে চলে?”
এ সিনেমায় অভিনয় করার কারণ ব্যাখ্যা করে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, “বরাবরই গ্রাম আমাকে টানে। একটা টান অনুভব করি। বর্তমানে ঢাকায় থাকলেও আমি তো আসলে গ্রামেরই ছেলে। যখন সিনেমার মেঠো পথ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি, কত পুরোনো ছবি মনে ভেসে উঠছে। এই ছবি করতে গিয়ে আমি বারবার পিছন ফিরে তাকিয়েছি। এখানে বাবা-ছেলের একটা সুন্দর সম্পর্ক দেখা যাবে। আমার বাবার চরিত্রটার সঙ্গে আমার ব্যক্তি জীবনের বহু মিল। কারণ এই চরিত্র ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। যিনি সমস্ত কিছু মুহূর্তের মধ্যে ভুলে যান। আমার বাবাও শেষ জীবনে এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এই সিনেমা করার আরও একটি কারণ হচ্ছে ব্রাত্যদা (বসু)। উনার সঙ্গে সিনেমা করার একটা আরাম আছে; সেটা আমায় ভীষণভাবে টানে।”
কিছুটা বিরতি নিয়ে কলকাতার সিনেমায় অভিনয় করছেন। এটা কী রাজনৈতিক কারণে? এ প্রশ্নের জবাবে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, “না। একটু লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবেন, এই বিরতিটা কিন্তু আমার কাছে খুব স্বাভাবিক। আমি কম সিনেমা করি। রাজনীতি কিংবা দেশ বুঝি না। আমরা বাংলা সিনেমার শিল্পী। সব দর্শকের জন্য সিনেমা তৈরি করি। এখানে কোনো বিভাজন নেই। সারা পৃথিবীর বাংলা সিনেমার দর্শকদের জন্য সিনেমা তৈরি হয়। আমার মনে হয় না, সেখানে রাজনীতির কোনো ঠাঁই আছে। এপার বাংলায় কাজের কথা চলছে; ওপার বাংলায়ও বেশ কিছু কাজ পাইপলাইনে রয়েছে। সিরিজ ও সিনেমা, দুই-ই।”
বারাণসীতে দু’দিন শুটিং হয়েছে; বোলপুরে হয়েছে আট দিনের শুটিং। এ তথ্য উল্লেখ করে পরিচালক ব্রাত্য বসু বলেন, “আসলে আমি তো শিকড়বিহীন। তাই সারাজীবন শিকড়ের সন্ধান চালিয়ে যাই। এটি তেমনই এক সন্ধানের সিনেমা। সম্পর্কের গল্প।”
সামাজিক গল্প কেন বলতে চাইলেন? এ প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক বলেন, “এই সিনেমা রাজনীতির কথাও বলে। জীবন তো রাজনীতিবিহীন নয়। সামাজিক গল্পের সঙ্গে রাজনীতির কোনো দ্বন্দ্ব নেই। একটা সামাজিক ভালোবাসার গল্প বলবে এই সিনেমা।”
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের মার্চে সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।