1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
ইন্দোনেশিয়ায় কাউন্সিল ভবনে বিক্ষোভকারীদের আগুন, নিহত ৩ - দৈনিক প্রথম ডাক
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

ইন্দোনেশিয়ায় কাউন্সিল ভবনে বিক্ষোভকারীদের আগুন, নিহত ৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৯ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় মাকাসার শহরের একটি কাউন্সিল ভবনে বিক্ষোভকারীদের ধরিয়ে দেওয়া আগুনে কমপক্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো চারজন। পুলিশের গাড়ি চাপায় রাইড শেয়ারিং চালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যে এ ঘটনা ঘটেছে।

শনিবার (৩০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহ থেকে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ইন্দোনেশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিক্ষোভ দমনের সময় পুলিশের গাড়িচাপায় ২১ বছর বয়সী এক রাইড শেয়ার চালক নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

মৃত চালকের নাম আফফান কুরনিয়াওয়ান। তিনি গো-জেক নামের বহুল ব্যবহৃত অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। পুলিশের গাড়ির নিচে চাপা পড়ে তার মৃত্যু ঘটে বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীও এই দাবি করেছেন।

এ ঘটনার জেরে বিক্ষোভকারীরা দক্ষিণ সুলাওয়েসির মাকাসার শহরে আঞ্চলিক সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তিনজন নিহত এবং আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন। নিহতরা ভবন থেকে বের হতে না পেরে আগুনে দগ্ধ হন। এছাড়া কয়েক ডজন গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রাজধানী জাকার্তা ও বৃহত্তম শহর সুরাবায়াসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ।

আফফান কুরনিয়াওয়ানের মৃত্যু ইন্দোনেশিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তোর জন্য বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) তিনি আফফান কুরনিয়াওয়ানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি ঘটনাটিকে তিনি ‘মর্মান্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেন এবং পুলিশের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের সমালোচনা করেন।

জাকার্তার পুলিশ প্রধান আসেপ এদি সুহেরি নিহত চালকের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেন এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। একই সঙ্গে জাকার্তার গভর্নর প্রামোনো অনুং আফফানের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও সমবেদনা জানান।

শুক্রবার আফফান কুরনিয়াওয়ানের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। সহকর্মীরা হাজার হাজার বাইক নিয়ে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেন। গো-জেকের পরিচিত সবুজ জ্যাকেট পরা চালকেরা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকে শেষ বিদায় জানান।

গো-জেক এক বিবৃতিতে জানায়, “প্রতিটি সবুজ জ্যাকেটের পেছনে রয়েছে একটি পরিবার, দোয়া এবং সংগ্রাম। আফফান কুরনিয়াওয়ান সেই যাত্রার অংশ ছিলেন। তার এই চলে যাওয়া আমাদের গভীর শোকের মধ্যে ফেলেছে।” প্রতিষ্ঠানটি তার পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকেই হাজারো বিক্ষোভকারী রাজধানী জাকার্তায় জাতীয় পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। প্রতিবাদকারীরা ‘অপরাধী পুলিশদের গ্রেপ্তার করো’ লেখা ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। তাদের বাধা দিতে সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িবহর আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের ভেতর থেকে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে পাথর ও মলোটভ ককটেল ছোড়ে।

আফফান কুরনিয়াওয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় ইন্দোনেশিয়ার মোবাইল ব্রিগেড কোরের (সাৎব্রিমোব) সাত সদস্যকে পুলিশ আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তবে এই আন্দোলনের পেছনে শুধু আফফানের মৃত্যু নয়, রয়েছে আরো বিস্তৃত অসন্তোষ।

গত সপ্তাহ থেকে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। এসব দাবির মধ্য রয়েছে- আইনপ্রণেতাদের বেতন-ভাতা কমানো, শ্রমের মজুরি বাড়ানো, কর কমানো এবং দুর্নীতিবিরোধী শক্তিশালী ব্যবস্থা নেওয়া। আইনপ্রণেতাদের জন্য প্রস্তাবিত ৫ কোটি রুপিয়া মাসিক ভাতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল ক্ষোভ জমে আছে, যা রাজধানী জাকার্তার ন্যূনতম মজুরির প্রায় দশগুণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT