1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Golam Saroar : Golam Saroar
শীতে ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয় গাইবান্ধার হোসিয়ারি পল্লিতে - দৈনিক প্রথম ডাক
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

শীতে ৫০০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয় গাইবান্ধার হোসিয়ারি পল্লিতে

রিপোর্টারের নাম :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৬ বার দেখা হয়েছে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি || কেউ চরকায় সুতা কাটছেন, কেউ ব্যস্ত রং করতে। অনেক কারখানায় ঘুরছে আধুনিক মেশিনের চাকা। দিন-রাত খুটখাট শব্দে মুখর হোসিয়ারি পল্লী। ঘরে ঘরে সোয়েটার, মোজা, কার্ডিগান, মাফলার, টুপি, বাচ্চাদের বিভিন্ন নকশার শীতের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত এখন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার হোসিয়ারি পল্লির নারী ও পুরুষরা।

শীত মৌসুম এলেই শীতবস্ত্র তৈরি ও বিক্রিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এখানকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। সারা দেশ থেকে আসেন পাইকাররা। তাদের মাধ্যমেই মৌসুমজুড়ে সাশ্রয়ী মূল্যে সোয়েটার, কার্ডিগান, মোজা, মাফলারসহ বিভিন্ন শীতবস্ত্র ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।

শুরুতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচার শহর, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে হোসিয়ারি শিল্পের বিস্তৃতি থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পার্শ্ববর্তী শালমারাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামজুড়ে গড়ে উঠেছে হোসিয়ারি শিল্পের ছোট-বড় কারখানা। বর্তমানে কারখানাগুলোতে চলছে কর্মব্যস্ততা ও বেচাকেনা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্বাধীনতার আগে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কোচার শহর এলাকার এক ব্যক্তি প্রথমে ঢাকা থেকে সোয়েটার বানানোর কাজ শিখে এসে নিজ এলাকায় এ কাজ শুরু করেন। ধীরে ধীরে হোসিয়ারি শিল্পের গ্রামে পরিণত হয় এই এলাকা। এখন বাড়ি বাড়ি গড়ে উঠেছে হোসিয়ারি শিল্পের কারখানা। কোনো বাড়িতে হাতে হাতে আবার কোনো বাড়িতে আধুনিক মেশিনে তৈরি হচ্ছে সোয়েটার, কার্ডিগান, মোজা, মাফলারসহ শীতের পোশাক। বাড়িতে ছোট ছোট কারখানা করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন স্থানীয়রা। দেশের বিভিন্ন স্থানে কাজ করলেও এখন বাড়িতে থেকেই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিক।

নয়ার হাট এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, আগে ঢাকায় কাজ করতাম। এখন বাড়িতে থেকে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এখন বাসা ভাড়াসহ অন্যান্য বাড়তি খরচ নেই। আামার মতো হাজারো শ্রমিক এখন বাড়িতে থেকে কাজ করছে।

কোচার শহর এলাকার কারাখানা মালিক রবিউল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় প্রত্যক বাড়িতে এখন ছোট-বড় কারখানা আছে। পরিবারের সবাই এসব কারখানায় কাজ করি। স্বল্প মূল্যে শ্রমিক পাওয়ায় এবং বাড়িতে থেকেই সব পোশাক বিক্রি হওয়ায় অনেক লাভ হয়। হোসিয়ারি শিল্পের কারণে এ এলাকায় কোনো বেকার খুঁজে পাওয়া যাবে না।

এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রিকে কেন্দ্র করে বিশাল এলাকা জুড়ে কয়েক শত পাইকারি দোকান নিয়ে গড়ে উঠেছে নয়ারহাট পাইকারি শীতের কাপড়ের বাজার। ঢাকা, চট্টগ্রাম, কেরানীগঞ্জ, রংপুর, বগুড়া, সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা প্রতিদিন আসছেন এখানে।

তবে, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার বেচাকেনা হলেও এখানে কোনো ব্যাংকের শাখা ও রাস্তাঘাটের উন্নয়ন নেই। ফলে, ব্যবসায় সমস্যা হয়।

নয়ারহাট এলাকার ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া অভিযোগ করেন, হোসিয়ারি শিল্পের বিপ্লব ঘটলেও এ এলাকার যোগাযাগ ব্যবস্থায় উন্নয়ন হয়নি। অনেক কষ্ট করে তাদের শিল্পের কাচাঁমাল আনতে হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এখানে আসেন। ব্যাংকের শাখা না থাকায় প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে তাদের সমস্যায় পড়তে হয়।

গাইবান্ধা বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল ফেরদৌস জানিয়েছেন, হোসিয়ারি শিল্প সম্প্রসারণে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ শিল্পের কারণে ওই এলাকার মানুষের জীবনমানে উন্নতি হয়েছে। প্রতিনিয়ত এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় এই হোসিয়ারি শিল্পের সম্প্রসারণ হচ্ছে। বেকার সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে এই হোসিয়ারি পল্লি।

তিনি বলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট-বড় প্রায় ৫ হাজার হোসিয়ারি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় প্রতি শীত মৌসুমে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার শীতবস্ত্র বেচা-কেনা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ

Categories

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed By: SISA IT